দালাল চক্রের খপ্পরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে যশোরের জাফর রাশিয়ায় মৃত্যু মুখে - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

a1

Friday, February 7, 2025

দালাল চক্রের খপ্পরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে যশোরের জাফর রাশিয়ায় মৃত্যু মুখে

 


যশোরের চাঁচড়ার ইউনিয়নের বড় মেঘলা গ্রামের জাফর হোসেন। তার বড় ইচ্ছে ছিল ইউরোপে গিয়ে পরিবারের ভাগ্যের চাকা উন্নতি করবেন। সংসার হবে সচ্ছল, জীবন হবে স্বাচ্ছন্দ্যময়। কিন্তু বিধিবাম হয়ে ওঠেনি কিছুই।এনজিও থেকে ৪ লাখ ও সুদ করে ৩ লাখ এবং সোনা গহনা বন্ধক রেখে মোট ৮লাখ টাকার বিনিময়ে দেশ ছাড়েন জাফর হোসেন।

বিধিবাম কপালে জাফর হোসেনের আর ইউরোপ যাওয়া হয়নি। দালাল চক্র তাকে রাশিয়ার কাছে বিক্রি করে দেন। ফলে সে দেশে গিয়ে তাকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে অস্ত্র হাতে নামতে হয়েছে তাকে।

জাফর হোসেন যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়ার ইউনিয়নের বড় মেঘলা গ্রামের খায়রুল সরদারের ছেলে। জাফরের মা হাসিনা খাতুন ও স্ত্রী খাদিজা খাতুন। তার শিশু দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,দেশের বিভিন্ন জেলায় মানবপাচারের একটি বড় ধরনের ফাঁদ পেতেছে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। গ্রাম পর্যায় থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্তরে তাদের একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় প্রতিটি পয়েন্টে এই চক্রের সদস্যরা কাজ করছেন।

জাফর হোসেনের পরিবার জানান, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বিমানবন্দরে পৌঁছার পর থেকে শুরু হয় দালালচক্রের অত্যাচার। যুদ্ধে প্রশিক্ষণে যেতে না চাইলে দেওয়া হয় হত্যার হুমকি। করা হয় মারধর,দেওয়া হয় না খাবার।
জাফরে মা হাসিনা খাতুন বলেন, গত চার মাস আগে এনজিও থেকে ৪ লাখ ও সুদ করে ৩ লাখ এবং সোনা গহনা বন্ধক রেখে মোট ৮লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে রাশিয়া পাঠানো হয়। দালালের প্রতারণার ফাঁদে পরে সৌদিতে একমাস রাখে, এরপর দুবাই থেকে নতুন দালাল তাকে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাশিয়ায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়ে হচ্ছে। যেকোন মুর্হুতে যুদ্ধের ময়দানে নামতে হবে বলে ছেলে জানিয়েছে।

কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন,এখন তার ছেলে যুদ্ধের ময়দানে কান্নাকাটি করছে। সে জানিয়েছে,যুদ্ধ করতে গিয়ে বাংলাদেশি একজন মারা গেছে ও একজন গুরুতরভাবে আহত হয়েছে। আমার ছেলে এখন বাংলাদেশে ফিরে আসতে চাইছে। না হলে তার মৃত্যু হবে বলে জানিয়েছে। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।
জাফরে স্ত্রী খাদিজা খাতুন বলেন,সাইপ্রাস যাওয়ার উদ্দেশে ড্রিম হোম ট্রাভেলসে টাকা জমা দিয়েছিলেন জাফর। কিন্তু বিভিন্ন ছলছাতুরি করে তাঁকে রাশিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে কাজ দেওয়ার কথা বলে এজেন্সিটি। কিন্তু তাঁকে এখন যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যুদ্ধ না করলে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad