যশোরে মহালয়ার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

as

a1

Wednesday, October 2, 2024

যশোরে মহালয়ার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু

 

যশোরে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুভ মহালয়ার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে। আজ বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহরের পৌর পার্কে সনাতন ধর্ম সংঘের আয়োজনে মহালয়া উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রদীপ প্রজ্বালন ও উলুধ্বনির মাধ্যমে মহালয়ার শুভ সূচনা হয়। মূল আচার-অনুষ্ঠান হিসেবে ঘট স্থাপন করে ফুল, তুলসী ও বেলপাতা দিয়ে পূজা করা হবে। ত্রিভঙ্গ চরণ ব্রহ্মচারীর চণ্ডীপাঠের সঙ্গে সমবেত কণ্ঠে ইয়া চণ্ডী অর্চনা করেন ভক্তরা। এরবাইরে যশোর কালেক্টরেট পুকুরপাড়, বেজপাড়াতেও মহালয়ার উৎসব উদযাপিত হয়েছে।

এবছর যশোরে ৬৫২টি মন্দির ও মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৭৩২। এ হিসেবে ৮০টি মন্দির ও মন্ডপে এবার দুর্গাপূজা হচ্ছে না। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে-কেশবপুর ও ভবদহ এলাকায় জলাবদ্ধতা, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা ও  আর্থিক সংকট।

তবে বিভিন্ন সূত্রমতে, যশোরে দুর্গাপূজায় সরকারি বরাদ্দের চাল বেচাবিক্রি থেকে শুরু করে নানাভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। জেলাটিতে এতদিন পূজা উদযাপন পরিষদ সরকারি বরাদ্দের চাল উত্তোলন ও বিক্রি করে তালিকাভুক্ত মন্দির ও মণ্ডপ কমিটির হাতে নগদ অর্থ বিতরণ করে আসছে। অভিযোগ তোলা হয়েছে-পারিবারিক পূজা হয় নিজস্ব অর্থে কিন্তু সেই পূজা দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দের অর্থ নয়-ছয় করা হয়। তাছাড়া চাল বিক্রিতে যেমন নয়-ছয় করার অভিযোগ রয়েছে, তেমনি চাল বিক্রির টাকা মন্দির কমিটির কাছে হস্তান্তরের সময় পরিদর্শনের নামে নির্দিষ্ট অংকের অর্থ পূজা উদযাপন পরিষদ কর্তন করে থাকে। এমনও অভিযোগ রয়েছে-যে সংখ্যক মন্দির-মন্ডপে পূজা আয়োজন করা হয়, ডিসির কার্যালয়ে তার সংখ্যা ৫ থেকে ৭টি বেশি দেখিয়ে চাল উত্তোলনের মাধ্যমে হজম করা হয়। এসব নিয়ে সন্তাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় এবছর সিংহভাগ নেতাকর্মী পূজা উদযাপন পরিষদ ত্যাগ করে বৈষম্য বিরোধী ‘সনাতনী সমাজ’ নামে একটি সংগঠন করেছেন। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় সভা করে স্ব স্ব মন্দির কমিটির হাতে সরকারি বরাদ্দের চাল বা অর্থ বিতরণের দাবি করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলেও সংগঠনটির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা স্বর্ণলতা ডট নিউজকে নিশ্চিত করেছেন। 

সংগঠনটির আহবায়ক মৃণাল কান্তি দে বলেন-গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। প্রত্যেক মন্দির ও মন্ডপে সরকারি অনুদানের চাল বিক্রির অর্থ থেকে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত আত্মসাৎ হয়ে আসছে এতদিন। এটি যশোর সদরে হয় উল্লেখ করে মি. মৃণাল বলেন-আমরা বৈষম্য বিরোধী ‘সনাতনী সমাজ’র পক্ষ থেকে দাবি করেছি-স্ব স্ব মন্দির-মণ্ডপ কমিটির হাতে সরকারি অনুদান বরাদ্দ করতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

এদিকে, সরেজমিনে দেখা গেছে-যশোরে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভাস্কর শিল্পীরা। 

যশোর জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন-‘গত বছরের তুলনায় এবার পূজার মণ্ডপ কমেছে। কেশবপুর, মনিরামপুরে জলাবদ্ধতার কারণে অনেক জায়গায় পূজার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। দেশে বড় একটা প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। অনেক হিন্দু ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে মানুষের মনে কিছুটা আতঙ্ক রয়েছে। তবে যশোরের কোথাও প্রতিমা ভাঙচুর, হুমকি-ধমকির কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। প্রতিটি মণ্ডপ এলাকায় হিন্দু-মুসলিম মিলে নিরাপত্তা কমিটি করা হয়েছে। সরকারিভাবে মন্দিরে পূজার জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতারা যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন।’

অন্যদিকে, বৈষম্য বিরোধী ‘সনাতনী সমাজ’র অন্যতম উপদেষ্টা ও মানবাধিকার নেতা বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন-আশা করছি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার দুর্গাপূজা সার্বজনীনরুপ পাবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপনে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ খুবই আন্তরিক। সরকারি অনুদানের অর্থ নয়-ছয় প্রসঙ্গে মি. মল্লিক বলেন-জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি এবার নয়-ছয় করার সুযোগ অভিযুক্তরা পাবে না।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad