যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকা থেকে চাঞ্চল্যকর কঙ্কাল উদ্ধার (রাজীব হত্যা) মামলায় খায়রুজ্জামান শিহাব নামে এক পুলিশ কন্সটেবলকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। গতকাল শুক্রবার রাতে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লঙ্কারচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। পিবিআই যশোর আজ রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ৩০ মে যশোর শহরের পুরাতন কসবা নিরিবিলি পাড়ার বজলুর রহমান বাউন্ডারী দেয়া ঘেরা জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য খোড়ার সময় পরিত্যাক্ত পুরাতন টয়লেটের কুয়ার ভিতর একটি নীল রঙ্গের প্লাস্টিকের ড্রাম পায়। যার মধ্যে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি পাওয়া যায়। এরপর পিবিআই যশোর জেলা ছায়া তদন্ত অব্যহত রাখে। নিখোঁজ জিডির অনুসন্ধানকালে পিবিআই ভিকটিম রাজিবের পরিচয় শনাক্ত করে এবং তার বাবা-মাকে খুঁজে পায়।
পরে তার বাবা বাদী যশোর কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পিবিআই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে হত্যাকান্ডে জড়িত সজিবুর রহমান(৩৪), সাইফুল হক লিটন (৩৬), মোঃ হুমায়ুন কবির খান বাবু (৩৫) ও রিক্সা চালক মোঃ সালামকে (৫৫) গ্রেফতার করে। তাদের দেয়া জবানবন্দিতে খায়রুজ্জামান শিহাব নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের জড়িত থাকার তথ্য মেলে। তখন শিহাবের সন্ধান নিয়ে জানা যায় যে, তার বাড়ি নড়াইল জেলার লোহগড়া থানায়। সে সর্বশেষ গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানায় কর্মরত ছিল। পরে তার কর্মস্থালে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের পর সে ছুটি নিয়ে আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে গতকাল শুক্রবার রাতে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লঙ্কারচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি খায়রুজ্জামান শিহাবকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়। খায়রুজ্জামান শিহাবকে আজ শনিবার আদালতে সোপর্দ করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে সে উল্লেখ করেছে, ২০১৬ সালে চাকুরীসূত্রে যশোর জেলায় কর্মরত থাকাকালে আসামী সজীবের সাথে পরিচয় হয়। শিহাব ও সজীব একসাথে চলাফেরা করত। সজীব ২০১৬ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে এক রাতে শিহাবকে ফোন করে তার বাড়িতে আসতে বলে। তখন সে সেখানে যেয়ে দেখে বাড়ীর ভিতরে থাকা সুপারি গাছের সাথে রাজীবকে কারেন্টের তার দিয়ে বেঁধে রেখেছে। রাজীব ওই বাসায় বাসায় কেয়ারটেকারের কাজ করত। রাজীবের সাথে সজীবের নারী ঘঠিত বিষয় নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এরই সূত্রধরে ঘটনার দিন রাজিবকে গাছের সাথে বেধে রাখে। তখন সজীব শিহাবকে বলে, ‘‘ওকে কি থানায় দিব”।
তখন শিহাব বলে, ‘‘থানায় দিলে পরিবারের দুর্নাম হবে। এরচেয়ে ওকে মারপিট করে সকালে ছেড়ে দিয়েন।” ২/৩ দিন পর সজীব শিহাবকে বলে রাজীব মারা গেছে। তখন শিহাব সেখানে যেয়ে রাজীবের মৃতদেহ দেখতে পায়। পরবর্তীতে হত্যার ঘটনা গোপন করার জন্য মৃতদেহ ড্রামের ভিতর ভরে আসামি সালামের রিক্সা যোগে সজীবের বাড়ি থেকে দুলাভাই মসিউর রহমানের অফিসের টয়লেটের কুয়ায় রেখে মাটিচাপা দিয়ে রাখে।
No comments:
Post a Comment