সচ্ছল-অসচ্ছল ও প্রবীণ-শিশুদের এক ছাতার নিচে নিয়ে এসে বসবাসের অনন্য এক পল্লী চালু হয়েছে যশোর সদর উপজেলার নাটুয়াপাড়া গ্রামে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও জিএমএসএস ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে এ নিবাস নির্মিত হয়েছে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গ্রামীণ পরিবেশে নির্মিত নিবাসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
এ সময় আরও উপিস্থিত ছিলেন- পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, যশোর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অসিত কুমার সাহা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামীণ মনোরম পরিবেশে প্রায় ২ একর জমির ওপর ৪ তলাবিশিষ্ট ভবনটিতে ১৫০ জন বসবাস করতে পারবেন। নির্মাণ ব্যয়ে ৮০ শতাংশ সরকারের এবং ২০ শতাংশ জিএমএসএস ফাউন্ডেশনের। এ মুহূর্তে এখানে বসবাসের জন্য প্রায় ৭০ জনের ডাটাবেজ করা হয়েছে। ১২ জন অবস্থান করছেন। উদ্বোধনের পরপরই সবার থাকার ব্যবস্থা উন্মুক্ত করা হবে। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৩০ শতাংশ বিনামূল্যে রাখা হবে। ৭০ শতাংশ থাকবে যৌক্তিক মূল্যে। এটা সম্পূর্ণ অলাভজনক সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলে দানশীলরা এখানে আর্থিক সহায়তা দিয়ে সামাজিক অবদানে সুযোগ পাবেন। এখানে দেওয়া সহায়তার অর্থ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুসারে সম্পূর্ণ আয়করমুক্ত সুবিধার আওতায় থাকবে।
জিএমএসএস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রফেসর ডা. এমএ রশিদ বলেন, সমাজ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পরিবারের ছেলে-মেয়েরা দেশে-বিদেশে কাজের সন্ধানে চলে যাচ্ছে। বাড়িতে থেকে যাচ্ছেন প্রবীণরা। তারা হয়ে পড়ছেন অবহেলিত। তাদের দেখার কেউ থাকছে না। এছাড়া সমাজের আরেকটি বড় অংশ অবহেলিত শিশুরা। তাদেরও এখানে নিয়ে এসে যত্নের সঙ্গে গড়ে তোলা হবে। যেন তারা বিপথগামী হতে না পারে। এখানে তারা শুধু থাকবে, শুবে আর খাবে, ব্যাপারটা এমনও না।
তিনি আরও বলেন, এ কম্পাউন্ডের চারপাশে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, মহিলা মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেখানে তারা লেখাপড়া শিখতে পারবে। প্রবীণদের জন্য এখানে ব্যবস্থা আছে কৃষিকাজ, বাগান করা, পোলট্রি, গরু-ছাগলের খামার, মাছচাষের মতো কাজে যুক্ত থাকার সুযোগ। রয়েছে শরীরচর্চা, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবার সবরকম সুবিধা। এমনকি ইসিজি, এক্সরেসহ প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, বার্ষিক স্বাস্থ্য চেকআপ, জরুরি প্রয়োজনে নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে শহরের দুটি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাও আছে। ছোট-বড় সবার জন্য আছে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
No comments:
Post a Comment