অভিযান সত্বেও থামেনি কপোতাক্ষের অবৈধ বালু উত্তোলন - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

as

a1

Thursday, February 10, 2022

অভিযান সত্বেও থামেনি কপোতাক্ষের অবৈধ বালু উত্তোলন

 

 যশোরের চৌগাছায় কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। গত বুধবার চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানার নেতৃত্বে উপজেলার তাহেরপুর পানিগ্রাম রিসোর্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেশিনসহ বালু উত্তোলনের সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। তবুও নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। বরং নতুন নতুন জায়গায় বালু উত্তোলনের প্রস্ততি নিচ্ছে বালু উত্তোলনকারীরা।

সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার পেটভরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নদের মাঝে কয়েকটি মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেখানে প্রায় ২০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। সেখানে দেখা যায় নদের দুই পাড়ে কয়েক হাজার ট্রাক বালু তুলে রাখা হয়েছে। তিনটি মেশিন নদের মাঝখানে বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। একইদিন উপজেলার হাজরাখানা শ্মশানঘাটে নদের মধ্যে একটি মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি নেয়া নিতে দেখা যায়।

বুধবার সন্ধ্যা থেকে মেশিনটি বসানোর কাজ শুরু করেছে বলে স্থানীয়রা জানান। এছাড়াও উপজেলার দিঘলসিংহা গ্রামের কয়েক জায়গায়, নারায়নপুর, ভগবানপুর, হাকিমপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর, কোমরপুর ও স্বরূপপুর গ্রামের বেশ কয়েকটি জায়গায় মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে এসব ব্যক্তিরা বালু উত্তোলন করায় তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না। তাঁদের অভিযোগ এভাবে মেশিন দিয়ে বালু তোলায় এসব এলাকায় থাকা কৃষকের জমি যে কোন সময় ধ্বসে নদে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

স্থানীয়দের আরও অভিযোগ এসব এলাকার ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারী এভাবে বালু উত্তোলনকারীদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেয়ার মাধ্যমে নির্বাহী কর্মকর্তা বা এসিল্যান্ড অভিযান চালালে বালু উত্তোলনকারীদের গোপনে সংবাদ পৌছে দেন। ফলে অভিযানের সময়ে বালু উত্তোলনকারীদের আর পাওয়া যায়না। আবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠালে তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে ঘুরে রিপোর্ট করেন তাঁদের কারও ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। ফলে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি চৌগাছা সদর ইউনিয়নের দিঘলসিংহা গ্রামের ইউপি সদস্য বায়েজিদ হোসেন চার বালু উত্তোলনকারীর নাম উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে ওই ব্যক্তিদের বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও চক্রটি সেখানে বালু তোলা বন্ধ রাখেনি। হাকিমপুর ইউপির তাহেরপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মোঃ স্বাধীন তাহেরপুরে বালু তোলা চক্রের লোকজনকে দুইদিন বালু তুলতে নিষেধ করলেও তারা শোনেনি।

পরে বুধবার সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে দুটি মেশিনসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি জব্দ করেন। চৌগাছা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিষেধ করার পর এক জায়গায় অভিযান চালিয়েছেন। তবুও অন্য জায়গাগুলোতে বালু তোলা অব্যাহত রয়েছে।

দ্রুত অন্য জায়গাগুলোতেও অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ করে নদ বাচানোর জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। আশা করি জেলা প্রশাসক মহোদয় দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, একটি মিটিংয়ে রয়েছি। সেখানে এখনই লোক পাঠিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন বুধবার অভিযান চালিয়ে দুটি মেশিন জব্দ করা হয়েছে। অন্যস্থানগুলোতেও অভিযান চালানো হবে।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad