যশোরে ধর্মীয় লেবাসে প্রতারণা শুরু করেছে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। সম্পদ দ্বিগুন করে দেয়ার নামে ভয়ানক প্রতারণা করে পথে বসাচ্ছে অনেক প্রতারককে। ঝিনাইদহে প্রতারণা করে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসা সংঘবদ্ধ চক্রকে অভয়নগর থেকে পাকড়াও করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আর এ ঘটনায় তুমুল হৈছে শুরু হয়েছে চক্রের ৪ জন আটক হওয়া পর। ঘটনায় জড়িত আরো কয়েকজনের খোঁজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জেলা গোয়েন্দা শাখা জানিয়েছে, ঝিনাইদহর মহেশপুর উপজেলার বৈচিতলা মন্ডলপাড়ার নাজিমউদ্দিনের ছেলে পলাশ মিয়া গত ২৯ জানুয়ারি যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখায় এসে অভিযোগ করেন। জানান, মাছুরা নামে একজন প্রতারক ভন্ড মহিলা ধর্ম আত্মীয় সেজে তার বাড়িতে যায়। এসময় তিনি প্রতারণামূলকভাবে সম্পদ দ্বিগুন করার কথা বলে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি এখন অভয়নগর থানা এলাকায় অবস্থান করছেন।
এই তথ্যে জেলা ডিবি অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার পিপিএম তদন্তের জন্য এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এর উপর দায়িত্ব দেন। এরপর পুলিশ পরিদর্শক শেখ শাহীনুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম সঙ্গীয় ডিবি’র চৌকশ টিম গোপন ও প্রকাশ্য তদন্ত শুরু করে। এরপর প্রতারক মাছুরার অবস্থান শনাক্ত করে ৩০ জানুয়ারি বিকেলে অভয়নগরের মহাকাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাছুরা ও তার স্বামী শাহিনুর শেখকে আটক করেন। এছাড়া তাদের দখল থেকে চোরাই টাকা দিয়ে কেনা ১টি ইজিবাইক ও মোবাইল ফোন জব্দ করেন। এরপর তাদের তথ্যের ভিত্তিতে অভয়নগরের নওয়াপাড়া বাজারের সোনাপট্টিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। বাজারের রূপশ্রী জুয়েলার্সের মালিক উত্তম কর্মকারকে আটক করে তার হেফাজত থেকে ১ভরি ১ আনা ৫ রতি স্বর্ণ ও স্বর্ণ বিক্রির নগদ ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা জব্দ করেন। তিনি চাপাতলার মৃত হাজারী লালের ছেলে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মহাকাল মিস্ত্রীপাড়ার সাইফুদ্দিনের স্ত্রী আমেনা খাতুনকে আটক করে আরো ১টি স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এই ঘটনায় পলাশ ৩১ জানুয়ারি অভয়নগর থানায় এজাহার দেন, যার নাম্বার ২২।
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, অভয়নগর থানায় দায়ের হওয়া মামলাটিও তদন্ত করছেন ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম। প্রাথমিক তদন্তে তথ্য মিলেছে, মাছুরা খাতুন একজন বড় ধরণের প্রতারক। সে প্রতারণামুলকভাবে সম্পদ ডাবল করার মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে স্বাভাবিক জ্ঞানশুন্য করে। এরপর মুল্যবান সম্পদ স্বর্ণ ও নগদ অর্থ চুরি করে তার সহযোগীদের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। আটককৃত ৪ জন সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা পরস্পর যোগসাজসে মানুষকে ধোকা দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে পথে বসিয়ে থাকে বলে তথ্য প্রমান পাওয়া গেছে।
উদ্ধার হওয়া ১ ভরি ৯ আনা ২ রতি ৩ পয়েন্ট সোনার মুল্য এক লাখ দশ হাজার টাকা। চোরাই নগদ টাকা দিয়ে ক্রয় করা ১টি ব্যাটারী চালিত ইজিবাইকের দাম এক লাখ একানব্বই হাজার টাকা, ১টি ভিভো এন্ড্রোয়েড মোবাইল ফোন, যার দাম আঠারো হাজার টাকা। উদ্ধার হওয়া জিনিসগুলোর দাম চার লাখ সতের হাজার টাকা। এ চক্রে আরো অনেকে আছে, যাদের আটক করা হবে।
No comments:
Post a Comment