আরবপুরে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী কাসেমের পক্ষ নিয়ে টাকার বস্তা ও বোমার মসলা লেনদেন করছেন অভিযোগ তুলে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশের উর্ধতনরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আরশাদ আলী রহমানের ছেলেরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ শাহারুলের। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আরশাদ আলী রহমান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, উত্তেজিত এলাকাবাসী হামলা চালায় বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ৪ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজী কাসেমের কর্মী এলাকার শাহাব উদ্দিন বাবু ওরফে নার্সারি বাবু দৌঁড়ে ভেকুটিয়ায় বর্তমান চেয়ারম্যান শাহারুলের বাড়িতে আসেন। এরপরই ওই এলাকার ২০/ ৩০ জনের সংঘবদ্ধ লোকজন চেয়ারম্যান শাহারুলের বাড়ি ঘেরাও করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে এবং গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় তারা বাবুকে ওই বাড়ি থেকে বের করে অপহরণের হুঙ্কার দেয়। বিএনপি প্রার্থী কাজী কাসেমের পক্ষে ভোট করে দেয়ার জন্য ওই বাবু শাহারুলকে বস্তায় ভরে টাকা ও বোমার মশলা দিতে এসেছে বলে হুঙ্কার ছাড়ে ওই বিক্ষুব্ধরা। এ সংবাদ পুলিশের কছে গেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন, কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ রুপণ কুমার সরকারসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা যাওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়।
শাহারুলের বিরুদ্ধে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষ নেয়া ও তার জন্য বস্তায় টাকা আনার বিষয়ে পুলিশের সামনে অভিযোগ তুললে এডিশনাল এসপি শাহারুলের বাড়ি তল্লাশী করাসহ নার্সারি বাবুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পুলিশ ওই বাড়িতে প্রায় ঘন্টাখানেক অবস্থান করেন। তবে যে সব অভিযোগ আনা হচ্ছে তার সত্যতা পায়নি পুলিশ।
এদিকে, শাহারুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী মীর আরশাদ আলী রহমানের পক্ষেই কাজ করছেন। কিন্তু মীর রহমান ও তার ছেলেরা সন্দেহ করছেন তিনি তাদের ভোট করছেন না। আস্থাহীনতায় ভুগছিলেন তারা। মীর রহমানের ছেলেরা ভোট করার জন্য নার্সারি ব্যবসায়ী বাবুর কাছে চাঁদা দাবি করে। ৪ জানুয়ারি দুপুরে তারা বাবুকে ধাওয়া করলে সে তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এসময় রহমানের ছেলে মনি, মিলনসহ ৩০ থেকে ৫০ জন তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর চালায় ও গালিগালাজ করে। এলাকার মতিয়ার রহমান, মিন্টু, জাহিদুল ইসলাম ও আশরাফকে মারপিট করেছে তারা। তার বিরুদ্ধে হাস্যকর সব অভিযোগ ছুঁড়ে পরিবেশ নষ্ট করছিল। এরপর তিনি পুলিশকে ফোন দিলে এডিশনাল এসপির নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ প্রার্থী মীর আরশাদ আলী রহমান গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, শাহারুল নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করছে। বিএনপির প্রার্থীর হয়ে গোপন মিটিং করে চলেছে। নৌকার বিপরীতের প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতাচেছ। ৪ জানুয়ারি দুপুরে বিএনপি কর্মী চারা বাবু ওরফে বোমা বাবু টাকার ব্যাগ ও বোমার মসলা নিয়ে শাহারুলের বাড়িতে গিয়েছিল। দুপুরে এ খবর জানতে পেরে উত্তেজিত এলাকাবাসী শাহারুলের বাড়িতে হামলা চালায় বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তার ছেলেরা ওই বাড়িতে যায়নি। টাকার লেনদেন ও বোমার মসলার ব্যাপারে তিনি পুলিশ ও এসিল্যান্ডকে জানালে সেখানে পুলিশ যায়। তবে কাউকে আটক করে আনেনি। শুধু শাহারুলকে শাসিয়ে এসেছে।
এ বাপারে এডিশনাল এসপি মোহাম্মদ বেলাল হোসাইনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নানা অভিযোগ এসেছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। বিষয়গুলো নিয়ে আরো খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। নির্বাচনী ব্যস্ততা চলছে, পরে সব ঘটনা জানানো হবে।
No comments:
Post a Comment