গতিপথ পরিবর্তন করেছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। এটি ভারতের ওড়িশা ও অন্ধ্র প্রদেশের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলেও পূর্ব দিকে মোড় নিয়ে বাংলাদেশের দিকে আসছে। এর প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠেছে। দেশের বিভিন্ন জায়াগায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে।শনিবার আবহাওয়া অফিস চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্নিঝড় ‘জাওয়াদ’ আরো উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। সকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন রয়েছে।
ঝড়টি এখনো ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে ঘুরছে। সেটা যদি আবার গভীর সাগরে চলে আসে, তাহলে সেটা আরও শক্তি সঞ্চার করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ভূমিতে উঠে এলে ঝড়টি ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। ভূমিতে আঘাত করার পর তার প্রভাবে অন্তত দুইদিন ধরে ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটির নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ায় আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থার (ইএসসিএপি) তালিকা অনুযায়ী, এই ঝড়ের নামকরণ করেছে সৌদি আরব। আরবি শব্দ জাওয়াদ অর্থ উদার, দয়ালও কিংবা দানশীল।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ বর্তমানে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে আড়াইশো কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে। তারা ধারণা করছেন, ওড়িশা উপকূল ধরে এই ঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হানবে। ঝড়টি যে গতিতে ঝড়টি এগোচ্ছে, তাতে রবিবার পাঁচই ডিসেম্বর দুপুরের পর নাগাদ ওড়িশা বা পশ্চিমবঙ্গে উঠে আসতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি দুপুর ১২টার পর চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৬৫ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৫০ কিলোমিটার এবং পায়রা সুমদ্র বন্দর থেকে ৮৬৫ কিলোমিটার দক্ষিন-দক্ষিন পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্যও বলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment