প্রায় একযুগ পর যশোরে মাঠে নেমেছে বিএনপি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রিয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার টাউন হল ময়দানে পাঁচ জেলার গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকার সাবেক মেয়র মীর্জা আব্বাস বলেছেন, বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের যশোর থেকে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হলো। জুলুমবাজ এ সরকার বিএনপিকে যশোরে গণসমাবেশ করতে দিতে চায়নি। কিন্তু নেতৃবৃন্দের প্রতিবাদের মুখে পেটুয়া বাহিনী সরে যাওয়ায় টাউন হল মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হবে।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য সমাবেশ করতে হয়, এটা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এদেশে খুনী, চোর বাটপাররা মুক্তি পাবে, অথচ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয় না। এর কারণ হচ্ছে খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে খুন, গুম ও লুটেরা এ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
মীর্জা আব্বাস বলেন, ভোটবিহীন এ সরকার নির্বাচন নিয়ে খেলা করছে। তারা নির্বাচন কমিশন নয়, হুদা মার্কা ছাগল পুষছেন। এ কমিশনের অধিনে বিএনপি কোন নির্বাচনে যাবে না, তবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, চোর ও মাফিয়ার গডফাদার এ শাসকচক্রের জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করিনি। এ অবস্থা থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। এর জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই। এ জন্য তিনি সবাইকে আন্দোলনে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি বিএনপির কেন্দ্রিয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও ভোটবিহীন দখলদার সরকারের হাত থেকে মানুষ মুক্তি চায়। এ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এ দেশে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। প্রতিষ্ঠা পাবে দেশে মানবাধিকার। এ আন্দোলনে তিনি সকলকে শরিক হবার জন্য আহবান জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কেউই মুক্তিযুদ্ধ করেননি, এমনকি ৩০ লাখ শহীদের মধ্যে তাদের কেউ নেই।
যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মশিয়ূর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খান ও নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চুর পরিচালনায় বক্তৃতা করেন বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, যশোর নগর বিএনপির আহবায়ক মারুফুল ইসলাম মারুফ, থানা বিএনপির সভাপতি নূরুন্নবী, সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম, সাবিরা নাজমুল মুন্নী, আবুল হোসেন আজাদ, ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূব, জেলা যুবদলের সভাপতি এম, তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজেদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পী, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়। শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন মোড়ে পুলিশি চেকপোস্ট বসানো হয়। এছাড়া, টাউন হল ময়দানের তসবীর মহল ও ইন্সটিটিউট স্কুলের গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চালাচলও সীমিত ছিল।
No comments:
Post a Comment