কোনো রকম প্রচার-প্রচারণা বা ঘোষণা ছাড়াই যশোরের সাত হাজারেরও বেশি টেলিফোন নম্বর পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে টিঅ্যান্ডটি। বিষয়টি জানা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার গ্রাহক। তারা ঠিকমতো টেলিফোন ব্যবহার করতে পারছেন না। অনেকেই আবার তাদের টেলিফোন নম্বরটিই জানেন না। এ কারণে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।সারাদেশে একই নম্বর চালুর কাজ শুরু করেছে টিঅ্যান্ডটি। নতুন সিস্টেমে ১১ সংখ্যার নম্বর হচ্ছে। সারাদেশে অভিন্ন কোড নম্বর হচ্ছে ০২। টেলিফোন গ্রাহকদের বর্তমানে ০২ কোডসহ ১১ সংখ্যার টেলিফোন নম্বর ব্যবহার করতে হবে। এই নতুন সিস্টেমে যেতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের।
টিঅ্যান্ডটিতে খোঁজ নিয়ে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, যশোর জেলায় সর্বমোট সাত হাজার দুশ’ ১৯ টি টেলিফোন সংযোগ রয়েছে। দশটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে এসব সংযোগ। এরমধ্যে যশোর এক্সচেঞ্জের আওতায় পাঁচ হাজার চারশ’ ৩৩ টি, ঝিকরগাছায় দুশ’ ৬৪, চৌগাছায় দুশ’ ২০, শার্শায় তিনশ’ ৫৩, অভয়নগরে দুশ’ ৭২, মণিরামপুরে দুশ’ তিন, কেশবপুরে একশ’ ৫৬, বাগআঁচড়ায় ৭৭, বাঘারপাড়ায় একশ’ এক ও খাজুরায় একশ’ ৪০ টি টেলিফোন সংযোগ রয়েছে।
এইসব সংযোগকে ০২ কোড সংবলিত ১১ সংখ্যার নম্বর দিয়ে জি-ফোন করা হচ্ছে। টিঅ্যান্ডটি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,ইতিমধ্যে এক হাজার নয়শ’ ৪২ টি সংযোগের টেলিফোন নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে। এরমধ্যে উপজেলা পর্যায়ের নয়টি এক্সচেঞ্জে রয়েছে এক হাজার সাতশ’ ৮৬ এবং যশোরে একশ’ ৫৬ টি। পর্যায়ক্রমে সকল সংযোগকে জি-ফোনে রূপান্তরিত করা হবে।
টেলিফোন সংযোগকে জি-ফোনে রূপান্তর করতে গিয়ে গ্রাহকরা পড়ছেন যত সমস্যায়। অনেক গ্রাহকের অভিযোগ,তারা তাদের টেলিফোনের নতুন নম্বর জানেন না। ফলে, ব্যবহার করতে পারছেন না। মোট কথা, টেলিফোন সংযোগ নিয়ে গ্রাহকই পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়। গ্রাহকদের এখন ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা। তারা বলছেন, টেলিফোন নম্বর পরিবর্তনের মতো একটি বড় কাজের আগে ব্যাপক আকারে প্রচার-প্রচারণার দরকার ছিল। অথচ টিঅ্যান্ডটি সেটি করেনি। ফলে, তাদের অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। এ কারণে গ্রাহক মুজিবুর রহমান, আব্দুস সালামসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আবার অনেক গ্রাহকের অভিযোগ,তারা এখন নতুন নম্বর থেকে পুরাতন নম্বরে ফোন করতে পারছেন না। ফোন করলে প্রথমে ডায়ালটোন পাওয়া যাচ্ছে না। এক মিনিট মতো অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অধিকাংশ গ্রাহকের অপেক্ষা করার বিষয়টি জানা না থাকায় তারা কথা না বলে রেখে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে টিঅ্যান্ডটি কর্মকর্তাদের বক্তব্য,‘যে নম্বর চেঞ্জ করা হচ্ছে সেই নম্বরে ফোন করে বলে দেয়া হচ্ছে। তবে, অনেক গ্রাহক ফোন রিসিভ না করায় তারা জানতে পারছেন না। কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রাহক ১৭ ও ১৮-এ ফোন করে তার নতুন নম্বর জেনে নিতে পারবেন। জানতে পারবেন তার মোবাইল ফোনে কল করেও।’ ১১ সংখ্যায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তাদের বক্তব্য,‘আগের সিস্টেমের পার্টস এখন আর অ্যাভেলেবল না। এছাড়া, টেকনোলজির উন্নয়নে এই পরিবর্তন করা হচ্ছে। নতুন সিস্টেমে ভয়েস কোয়ালিটি ভালো হবে। সিস্টেম চেঞ্জ করলে একটু ভোগান্তি হয়। জানার সাথে সাথে সব ধরনের সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে টিঅ্যান্ডটির যশোর ডিভিশনের ডিজিএম মাহফুজুর রহমান বলেন,‘টেলিফোন নম্বর চেঞ্জ করার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। হেড অফিস বিষয়টি ওয়েবসাইটে দিয়েছে। তাছাড়া, যে নম্বর পরিবর্তন হচ্ছে সেই গ্রাহককে আমরা ফোন করে জানাচ্ছি। একবারে না পেলে আবারও ফোন করা হবে।’
No comments:
Post a Comment