মুরগিসহ সবজি সাজিয়ে বসেছিলেন উদীচীর কর্মী-সংগঠকরা। এসব ছাড়াও টেবিল পেতে রাখা হয়েছিল প্যাকেট ভর্তি চাল। সংগঠনটির যশোর জেলা কার্যালয় আঙিনায় বুধবার ফ্রি-বাজার বসে। সেখান থেকে ২শ’ জনকে বিনামূল্যে সবজি, চাল ও মুরগি দেওয়া হয়। আর এটি ছিল সংগঠনটির দ্বিতীয় বারের ফ্রি-বাজার। এর আগেও একবার এরকম আয়োজন করে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের কাছে বিনামূল্যে খাদ্য-সামগ্রি পৌঁছে দেয় উদীচী।
তখন বেলা প্রায় ১১টা। বাজার শুরু হতে অল্প সময় বাকী। কিন্তু এর অনেক আগেই জড়ো হন খাদ্যপণ্য নিতে আসা মানুষ। টোকেন হাতে অপেক্ষা করেন ফ্রি-বাজার করার জন্য। সদরের চাঁচড়া থেকে ‘হুইল চেয়ার’ সদৃশ্য হস্ত চালিত যানে চেয়ে আসেন শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী আকবর আলী। তার ঠিক পাশেই মাটিতে বসেছিলেন আরেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আজিজ। হাতে তার ফ্রি-বাজারের টোকেন। তিনি যেমন দুপায়ে ভর দিয়ে হাঁটতে পারেন না। তেমনিভাবে কথাও ঠিক মতন করে বলতে পারেন না। নাম জিজ্ঞাসা করলে-অস্পষ্ট উচ্চারণে বললেন-তিনি আজিজ। ব্যাগ ভর্তি রকমারি সবজি, চাল ও আস্ত একখানা মুরগি হাতে পেয়ে চোখে-মুখে তার খুশির ঝিলিক। এদিন তার মতন আরো বেশ কয়েকজন প্রতিবন্ধী এখান থেকে বিনামূল্যে বাড়ির ‘বাজার’ সংগ্রহ করেন। ভাদ্রের রোদ মেঘের গরমে ঘেমে নেয়ে উদীচী কর্মী-সংগঠকরাও তাদের হাতে তুলে দেন রকমারি খাদ্য-সামগ্রি।
ফ্রি-বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৩ কেজি চাল, ১ কেজি করে আলু, পটল, কঁচুরমুখি, ঢেঁড়স প্যাকেট করে রাখা আছে। সেই সাথে বাজারে রয়েছে লাউ ও সোনালী মুরগি। প্রত্যেককে একটি করে চালেরসহ সবজির প্যাকেট ফ্রিতে সংগ্রহ করেন। এছাড়া ১টি করে লাউ ও ১টি সোনালী মুরগিও তারা নেন ফ্রি বাজার থেকে।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী যশোর জেলা সংসদ’র মানবিক সহায়তা তহবিল পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে ছিলো গতকালের এই ফ্রি-বাজারের আয়োজন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের যশোর সংসদের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য একরাম উদ-দ্দৌলাহ, ইকবাল কবীর জাহিদ, অশোক রায়, এ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, শহিদুল ইসলাম মিলন, ডা. ইয়াকুব আলী মোল্ল্যা, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহবুবুর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খাঁন বিপ্লব, অক্ষর শিশু শিক্ষালয়ের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শৈলেশ কুমার রায় (অবসরপ্রাপ্ত), আইইডি যশোর কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বীথিকা সরকার, উদীচী যশোরের মানবিক সহায়তা তহবিল পরিচালনা পরিষদের আহবায়ক জন দিলিপ দাস প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment