অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি:- দুদিকে শুধু পানি আর পানি এর মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ নওয়াপাড়া- মশিয়াহাটি হয়ে মনিরামপুর উপজেলায় মিলিত এ সড়ক। সড়কের দুপাশের বিলগুলো এক সময় সোনার ধানে দোল খেত। ভবদহের করাল জলাবদ্ধতার কারনে আজ সেখানে বিশাল জলরাশি। এই জলরাশিকে কেন্দ্র করে রাস্তা ঘেষে গড়ে উঠেছে বিশাল বিশাল মৎস্য খামার। মৎস্য খামারে সার ও খাবার প্রয়োগে রাস্তার মাটিতে গলন ধরে। তার সাথে রয়েছে দুপাড়ে আছড়ে পড়া ঢেউ । আর এভাবে গলে গলে বিলিন হচ্ছে সড়কটি।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেন, ২০০৬ সালে এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিলে ভবদহ পানি নিস্কাশন সংগ্রাম কমিটির নের্তৃত্বে শিল্প বাণিজ্য ও বন্দর নগরী নওয়াপাড়ায় হরতাল অবরোধ সহ ব্যাপক আন্দোলন সৃষ্টি হয়। তখন দাবি উঠে সড়কটি ভুমি থেকে অনেক উঁচু করে নির্মাণ করা। সেই দাবির প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০০৮ সালে অনেক অর্থ ব্যয় করে সড়কের ছয় কিলোমিটার ভূমি থেকে অনেক উঁচু করে পাঁকাকরণ করে। এর পর প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এলাকা প্লাবিত হলে লোকজন সড়কটির উপর অস্থায়ী বসতঘর নির্মাণ করে রাত্রি যাপন করে আসছে। বর্তমানে সড়কটিতে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের কোন কোন স্থান ধসে পড়েছে মাছের খামারে। অনেক ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ ওই সব স্থানে ফাটল অব্যাহত রয়েছে। যে কোন মুহূর্তে ওই স্থানটি সম্পূর্ণ ধসে পড়ে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যেতে পারে। তিনি সড়ক রক্ষা বাধ দিয়ে রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করেন’।
উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু বলেন,‘ প্রতি কিলোমিটার রাস্তা নির্মানে ব্যয় ধরা হয় এক কোটি ২০ লাখ টাকা আর গাইড ওয়াল সহ ব্যয় ধরা হয় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা। আমরা সড়কটির দুপাশে গাইড ওয়াল ধরে ২০১৯/২০ অর্থ বছরে ১৩ কোটি টাকার প্রাক্কলন প্রস্তাবনা হেড কোয়াটারে পাঠিয়ে ছিলাম। হেড কোয়াটার থেকে সেটাকে সংকুচিত করে আট কোটি টাকার প্রাক্কালন অনুমোদন করা হয়। কিন্তু সড়কের বাস্তব অবস্থায় দেখা যায় বর্ষা কালে এক কিলোমিটার পানিতে নিমজ্জিত থাকে এবং দুই কিলোমিটার পানি ছুই ছুই করে। এ জন্য সড়ক রক্ষা বাধ দেওয়া না হলে প্রতিবছর বর্ষাকালে ও ভবদহ জলাবদ্ধতার করনে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যে কারনে প্রকল্প বাতিল করে নতুন নকশা করে প্রাক্কালন পাঠানো হচ্ছে। আশা করি আগামী শুকনোর মৌসুমে সড়কটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।
মোঃ আমানুল্লাহ
No comments:
Post a Comment