জরুরী সভায় কাউন্সিলরদের নানা অভিযোগে মুখ খুললেন পৌর মেয়র পলাশ - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

as

a1

Thursday, July 15, 2021

জরুরী সভায় কাউন্সিলরদের নানা অভিযোগে মুখ খুললেন পৌর মেয়র পলাশ


যশোর পৌরসভার কাউন্সিলরদের মনে দানা বাধা ক্ষোভ আর নানা অভিযোগের বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন যশোরের পৌর মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ। এসব বিষয়ে ভবিষ্যতে  মেয়র স্বচ্ছতার সাথে সকলকে নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দেন।গতকাল পৌরসভার সভাকক্ষে এক ম্যারাথন বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় উত্থাপনের পর তিনি একে একে জবাব দেন। এসময় সকল কাউন্সিলর ও পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

সাতজন কাউন্সিলরের সাথে কথা বলে জানা যায়, সভার শুরুতেই কাউন্সিলরদের ফ্লোর দেয়া হয়। প্রথমেই তারা অভিযোগ করেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ জুন থেকে ৩০ জুন ২২ টন চাল আসলেও জানানো হয় ১৮ টনের কথা। এছাড়া পাঁচলাখ ২০ হাজার টাকার কথা কাউন্সিলরদের কাছে কেনো গোপন করা হয় সে বিষয়েও জানতে চান তারা।

জবাবে মেয়র জানান, চারটন চাল তিনি নিজে অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করেছেন। এছাড়া, যে টাকা এসেছে তার কিছু খরচ হয়েছে, বাকি টাকা মেয়রের ফান্ডে রয়েছে-যা আগামিতে অসহায়দের দেয়া হবে।
কাউন্সিলরদের অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে ছিল পরিষদকে না জানিয়ে বা কোনো সভার সিদ্বান্ত ছাড়াই শংকরপুরের বাস টার্মিনাল কি করে একজনকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং সেখান থেকে তার সহোদর টাকা ওঠাচ্ছেন। পরিষদের মেয়াদ পাঁচ বছর হলেও পৌর কমিউনিটি সেন্টার পৌর পরিষদকে না জানিয়ে মেয়রের একক সিদ্ধান্তের ওপর ১৫ বছরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মেয়র প্রথমে বলেন, তার ক্ষমতা রয়েছে। কাউন্সিলররা সংবিধান দেখতে চান। শেষমেষ মেয়র বলেন, তিনি নতুন ক্ষমতায় বসেছেন। ফলে অনেকটা না বুঝেই করে ফেলেছেন।
অভিযোগ করা হয়, মেয়র নিজেই মাস্টাররোলে কর্মরত ৪৫ জনকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে তাদের আবার বহাল রাখেন। একই সাথে আরো ২৫ জনকে মাস্টাররোলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, কয়েকজনকে হয়তো নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে কতজন মাস্টাররোলে শ্রমিক আছেন এবং তারা কিভাবে কাজ করছেন এসব বিষয়ে খোঁজ নিতে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয় প্যানেল চেয়ারম্যান মোকছিমুল বারী অপুকে। অন্য সদস্যরা হলেন রাশেদ আব্বাস রাজ, রাজিবুল আলম ও শেখ জাহিদ হোসেন মিলন।
এরপর কাউন্সিলরা অভিযোগ করেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে বস্তি উন্নয়ন কমিটি করা রয়েছে। ওই কমিটির তদারকি করবে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার এবং সার্বিক দেখভাল করবেন কাউন্সিলররা। কিন্তু মেয়রের ছেলে ও ভাই তদারকি করছেন। এমনকি ইঞ্জিনিয়ার ও কাউন্সিলরদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করা হয়। টেন্ডার বাদে ও কমিটিকে না জানিয়ে এনার্জি বাল্ব কেনা হচ্ছে। সেখানে ২শ’ টাকার বাল্ব দাম নেয়া হচ্ছে সাড়ে চারশ’ টাকা। এ বিষয়ে মেয়র বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি খতিয়ে দেখবেন।
অভিযোগ করা হয়, মেয়রের ছেলে ইমতিয়াজ গণি খান সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে যশোর পৌরসভার একটি গাড়ি ব্যবহার করছেন এবং তার তেল কেনা হচ্ছে পৌরসভার টাকা দিয়ে। মেয়রের ছেলে বহিরাগতদের নিয়ে পৌরসভার নতুন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষ আড্ডাখানায় পরিণত করেছেন। এছাড়া বহিরাগতদের নিয়ে পৌরপার্কে গিয়ে ডাব, নারিকেল কেটে ফেলেছেন। এছাড়া, প্রতিটি সেক্টরে তার ছেলে ও ভাই হস্তক্ষেপ করছেন বলেও কাউন্সিলরা অভিযোগ করেন।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, পৌরসভার গাড়ি অন্য কেউই ব্যবহার করেন না। এছাড়া বহিরাগত কিংবা তার নিকট আত্মীয়দের বিষয়ে তিনি এমনটি আর হবেনা বলে আশ্বস্ত করেন। এক পর্যায়ে ইজিবাইকের লাইসেন্স নিয়ে কথা তোলেন কাউন্সিলাররা। তবে, এসময় মেয়র অসুস্থতার কথা বলে সভা শেষ না করেই বিদায় নেন। মেয়রের অবর্তমানে আরো কিছু কথাবার্তা হয়। শেষ মেষ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকছিমুল বারী অপু সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন বলেন, কাউন্সিলরদের বিভিন্ন অভিযোগ ও সন্দেহ ছিল। এসব বিষয়ে মিটিং এ নানা কথা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সকলেই এ সভাকে পজিটিভ হিসেবে নিয়েছেন। 

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad