কাল থেকে কঠোর বিধি নিষেধ বাস্তবায়নের কর্মকৌশল গ্রহনে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে যশোরে কঠোর লকডাউনে কাঁচাবাজার বেলা ১২ টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এছাড়া কোনো হোটেল, রেস্টুরেন্ট খোলা রাখা যাবেনা।
যদিও বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিলো সেখানে বাজার ৫টা ও হোটেল রাত আটটা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টায় সভা শেষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন । তিনি আরো বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত যে প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে সেখানে পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসনকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। যেহেতু যশোরের অবস্থা ভয়াভয় সে বিষয়টি বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রশাসনের উর্দ্বোতন কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন।
অন্য আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সেগুলো হলো, সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমূহ বন্ধ থাকবে। বিধি-নিষেধ চলাকালীন যশোর জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে এবং আন্তঃজেলা বাস, ট্রেন ও সকল প্রকার গণপরিবহণসহ সিএনজি, রিক্সা, ভ্যান, অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল, থ্রিহুইলার, হিউম্যান হলার চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে রোগী পরিবহনকারী/এ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্য বহনকারী ট্রাক এবং জরুরি সেবা দানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। কাচাবাজারের সাথে ফুল ও নিত্য প্রয়োজনীয় (মুদিখানা) পণ্যের দোকানও দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এছাড়া সকল ধরনের দোকানপাট, শপিংমল, হোটেল, রেস্তোরা, চায়ের দোকান, বিপণীবিতান বন্ধ থাকবে। ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে। আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন-কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য, দুগ্ধ পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা কার্যক্রম, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বেনাপোল স্থলবন্দরে জরুরি আমদানি-রপ্তানি, নওয়াপাড়া বন্দরের সার সরবরাহসহ অন্যান্য কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি, বেসরকারি) গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংকসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, স্থানীয় সরকারের অধীন অফিসসমূহ, সরকারি অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারি ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভুত থাকবে। সবাইকে অবশ্যই ঘরে অবস্হান করতে হবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।
জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিল্প-কলকারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। শ্রমিকদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সকল পর্যটনস্থল, পার্ক, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এমন ধরণের সামাজিক (বিবাহ, জন্মদিন, পিকনিক, হালখাতা, পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জমায়েত বন্ধ থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ওয়াক্তের নামাজ মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ ৫ জন ও জুম্মার নামাজ সর্বোচ্চ ২০ জন জামাতে আদায় করবেন। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও এর বেশি জমায়েত হওয়া যাবেনা। সকল জরুরি নির্মাণ কাজ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলমান থাকবে এবং এ সংক্রান্ত পণ্য পরিবহন বিধি নিষেধের আওতাবহির্ভুত হবে। জেলার সকল পশুর হাট বন্ধ থাকবে।
এছাড়া সকাল নয়টা থেকে যশোরে যৌথ অভিযান শুরু হবে। অভিযানে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, ও র্যাব সদস্যরা অংশ নেবেন বলে জানানো হয়েছে।
No comments:
Post a Comment