ভারতের বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত দু’জনের বাড়ি যশোরে - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

as

a1

Saturday, May 29, 2021

ভারতের বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত দু’জনের বাড়ি যশোরে


ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ভাইরাল ভিডিওতে টিকটক হৃদয় বাবু’র সহযোগী হিসেবে ছিলেন আলামিন নামে যশোরের এক যুবকও। তার বাড়ি যশোর শহরের চাঁচড়া মধ্যপাড়া এলাকায়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর আলামিনের বাড়ির এলাকায় তোলপাড় চলছে। আলামিনের পরিবারের দাবি, আট মাস আগে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। স্থানীয় পুলিশও বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করেছে। এদিকে, নির্যাতনকারী ওই চক্রের ব্যাপারেও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, ২১ মে ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। এই নির্যাতনের জড়িত অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতারের খবরও দিয়েছে গণমাধ্যমগুলো। গ্রেফতার সবাই একই গ্রুপের এবং সবাই বাংলাদেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাটি প্রচার হওয়ার পর নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবা ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন। তরুণীকে পাচার করে নিয়ে যাওয়ার মূলহোতা টিকটক হৃদয় বাবু পরিচয়ও নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া নির্যাতনের ভিডিওতে হৃদয় বাবুর সহযোগী হিসেবে আলামিনও শনাক্ত হন। আলামিনের বাবা ভ্যানচালক মনু মিয়া বলেন, ‘আলামিন ভালো না। বাড়ি বসে কিসব (ইয়াবা) খেতো, বাইরের লোক আসতো, তাই আট মাস আগে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি। শুনেছি আলামিন ভারত গেছে, তার বউ বাপের বাড়ি। সেখানে সে কি করছে জানি না, তার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগে থেকেই বেপরোয়া আলামিন দেশে দুটি বিয়ে করেছে। দুই সংসারে তার দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের ফেলে তিনি ভারতে চলে যান। ভিডিওতে সে গোলাপী ফুলহাতা গেঞ্জি ও হাফপ্যান্ট পরিহিত এবং তার পায়ে কালো রাবারের ব্যান্ড রয়েছে। ভিডিওতে থাকা লাল ফুলহাতা টপস পরা মেয়েটির নাম তানিয়া। এই তানিয়ার বাড়ি যশোরের নওয়াপাড়ায়। তানিয়াকে আলামিন স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভারতে নিয়ে গেছে। আলামিন বা তানিয়ার কেউই এখনও আটক হননি। তারা ওই এলাকায় পালিয়ে রয়েছে।
এদিকে, ভারতের একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকটক হৃদয় বাবু, আলামিনসহ এই চক্রটি ভারতের বেঙ্গালুরুর কোর্টলোর এলাকায় থাকে। সেখানে ‘রাফি’ নামে একজনের আস্তানা রয়েছে। এই রাফির বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকায়। তার প্রকৃত নাম আশরাফুল মন্ডল। রাফিকে আলামিনরা বস বলে সম্বোধন করেন। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর আলামিন তানিয়াকে নিয়ে অবৈধপথে বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। যাওয়ার আগে সে চাঁচড়া এলাকার ইয়াবা বিক্রেতা কামরুলের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকার ইয়াবা কিনে নিয়ে যায়। ‘অরিজিনাল মাল’ হিসেবে মদকাসক্ত ‘রাফিকে’ উপহার দেয়ার জন্য এই ইয়াবা তিনি বেঙ্গালুরু নিয়ে গেছেন।
ভারতের সূত্রটি আরও জানায়, নির্যাতনে জড়িত আলামিন ও তানিয়া গা ঢাকা দিয়েছে। এছাড়া ডালিম ও সবুজ নামে আরও দুই যুবক ছিল, তারাও পালিয়ে গেছে। তবে বেঙ্গালুরু পুলিশ তাদের খুঁজছে। ভাইরাল ভিডিও নিয়ে কথা হয় চাঁচড়া মধ্যপাড়া এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। তারা জানান, এলাকায় এটি জানাজানি হওয়ার পর অনেকে আলামিনের পরিবারের সদস্যদেরও বিষয়টি জানিয়েছেন। এটি নিয়ে বাড়ির লোকজনও চাপের মধ্যে রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রকিবুজ্জামান বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ জানান। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসাইন জানান, ভারতের তরুণী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের ঘটনা তিনি জানেন। ওই ঘটনায় জড়িত কারও বাড়ি যশোরে এমন তথ্য এখন তারা পাননি। তবে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad