মায়ের বান্ধবীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে গিয়ে এক বছর ধরে নির্যাতনের শিকার শিশু আমেনা খাতুনের পক্ষে যশোরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
নির্যাতনের প্রতিবাদে শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমেনার ওপর নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে তাদের জানিয়ে দিতে হবে এ ধরনের নির্যাতনের পরিণতি কী হয়। সমাজে এরকম অনেক আমেনার ওপর নির্যাতন হয়; আমাদের সচেতনতার মাধ্যমে এর প্রতিরোধ করতে হবে। শিশুটির মায়ের বান্ধবীর কাছে এমন নির্যাতিত হবে ভাবাও যায় না। ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করার জন্য যশোর কোতোয়ালি থানায়ও যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু থানা থেকে ঢাকার সংশ্লিষ্ট থানায় মামলার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবার ঢাকায় গিয়ে এই মামলা চালানোতে অক্ষম। এমনকি নির্যাতনকারীদের ভয়ে মামলা করতে ভয় পাচ্ছে পরিবারটি। এমনকি নির্যাতনকারী পক্ষের আপসের হুমকিতেও জিম্মি হয়ে পড়েছেন শিশুটির পরিবার। মানববন্ধনে অবিলম্বে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের দাবি জানান বক্তারা। সেই সাথে সকল নারী ও শিশু নির্যাতের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন যশোর মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারদীনা রহমান এ্যানি, লিগ্যাল এইড সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার কনা, ভুক্তভোগী শিশুর নানী জোহরা বেগম, সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সাদিয়া মৌরিন, ফতেপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক বিএম মনিরুজ্জামান, নুর ইসলাম নুর প্রমুখ। পরে নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, করোনার প্রথমের দিকে মায়ের বান্ধবীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে গিয়ে এক বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হন সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের নূর ইসলাম ও আকলিমা খাতুনের মেয়ে আমেনা খাতুন (১১)। এর পর গত ২৩ মে শিশুটির নানী ঢাকায় গিয়ে আমেনাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে শিশু আমেনা চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার সারা শরীরে গরম খুন্তির ছ্যাঁকার দাগ। ক্ষত শুকিয়ে কালশিটে ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়। শিশুটির পরিবার অভিযোগ করছেন, আমেনাকে নিয়ে বাসাবাড়ির সব কাজ করানো হতো। এর আগে সে কোথাও কাজ করেনি বা শেখেনি। হাত থেকে পিরিচ পড়ে গেলে, কেন পড়লে জানতে চেয়ে মারধর করা হতো। অনেকবার হাত ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হাত মচকে দেয়া হয়েছে। প্ল্যায়ার্স দিয়ে মাথার চুল টেনে টেনে উঠিয়ে দিয়েছেন নির্যাতনকারী শ্যামলী ও তার স্বামী। গলায় এবং মাথায় যা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
No comments:
Post a Comment