রাত পোহালেই জন্ম নিতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এ অবস্থায় ভারতের ভূবনেশ্বরসহ উড়িষ্যার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে শুক্রবার (২১ মে) ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
দেশটির আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার নাগাদ উত্তর আন্দামান সাগর ও সংশ্লিষ্ট পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। পরবর্তীতে এটির তীব্রতা বেড়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এটি উত্তরপশ্চিম দিকে অভিমুখ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার উপকূলে ২৬ মে সন্ধ্যায় আঘাত হানতে পারে।
তবে এর প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা থেকে চট্টগ্রাম উপকূল বিস্তৃত হতে পারে। এদিকে এই পরিস্থিতির মধ্যেই দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি রকমের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
সাধারণত যে কোনো ঘূর্ণিঝড় প্রচুর বৃষ্টিপাত নিয়ে আসে। সেই হিসেবে ইয়াস আসায় তাপপ্রবাহ কিছুটা কমতে পারে। সাধারণত সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। সে কারণে বিদ্যমান তাপপ্রবাহের সঙ্গে লঘুচাপ-নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ের সম্পর্ক আছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে নাগাদ উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে পৌঁছাতে পারে।
গত দুসপ্তাহের মধ্যে ভারতে আঘাত হানতে এটি দ্বিতীয় কোনো ঘূণিঝড়। গত সপ্তাহে আরব সাগরে তৈরি হওয়া তাউতে আঘাত হানলে ১১০ জনের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়টি গুজরাটে আঘাত হেনেছিল।
বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির বিভিন্ন পর্যায় আছে। প্রথমে বিশেষ পরিস্থিতিটা লঘুচাপে রূপ নেয়। যা পর্যায়ক্রমে নিম্নচাপ এবং গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ২৫ মে’র দিকে শক্তিশালী রূপ লাভ করতে পারে। কম্পিউটার মডেল পর্যালোচনা করে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের আনুমানিক গতি হতে পারে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। তবে আশঙ্কার কথা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় বা এর আগের পর্যায়গুলো (লঘুচাপ ও নিম্নচাপ) সাগরে যত বেশি সময় ধরে থাকে, তত শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ পায়। তাই শেষ পর্যন্ত এটি যে সুপার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে না- তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
No comments:
Post a Comment