বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের কোয়ারেন্টিনের জন্য যশোর শহরের ১৬টি হোটেল রিকুইজিশন করা হয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ ছাড়াও তারকাসমৃদ্ধ হোটেলও রয়েছে।স্থান সংকুলান না হলে আশপাশের চার জেলার হোটেলগুলোতে কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। জেলাগুলো হলো, সাতক্ষীরা, খুলনা, ঝিনাইদহ এবং নড়াইল।
যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আজ দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় যশোরের হোটেল মালিক ও তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অবশ্য এই আনুষ্ঠানিকতার আগেই গেল রাতে প্রশাসনের এই রকম সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘ভারত থেকে যত লোক ফেরত আসার কথা আমরা চিন্তা করছিলাম, তার থেকে অনেক বেশি আসছে। বেনাপোলের হোটেলগুলো পূর্ণ হয়ে গেছে। ঝিকরগাছা উপজেলার গাজীর দরগাহ এতিমখানা ও মাদরাসার ভবনও পূর্ণ হয়ে গেছে। সেখানে ২০২ জনকে রাখা হয়েছে। যে কারণে এখন যশোর শহরের হোটেলগুলো রিকুইজিশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।’
তিনি জানান, হোটেলের মালিকরা ভারতফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বল্প খরচে থাকার ব্যবস্থা করতে সম্মত হয়েছেন। এসব হোটেলে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল হয়ে ফেরত আসা বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। দুই-একদিনের মধ্যে যশোর শহরের হোটেলগুলোও এসব মানুষে পূর্ণ হয়ে যাবে। সেই কারণে যশোরের পাশের জেলাগুলো- খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ এবং নড়াইলের হোটেলগুলোতেও তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হয়ে ভারতফেরতদের বিষয়টি দেখাশোনা করছেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রফিকুল হাসান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও ‘ব্যস্ততার কারণে’ তিনি কথা বলতে পারেননি।
তবে নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) কেএম মামুনুর রশিদ বিকেল পাঁচটার দিকে জানান, এখন পর্যন্ত ১৬টি হোটেল রিকুইজিশন করা হয়েছে। এগুলো হলো শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ডরমেটরি, জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেল, হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল সিটি প্লাজা, হোটেল ম্যাগপাই, হোটেল আর এস, হোটেল মণিহার, হোটেল ম্যাক্স, হোটেল সোনালী, সিটি হোটেল, হোটেল শাহরিয়ার, হোটেল বলাকা, হোটেল নয়ন, হোটেল নিউ ওয়ে, হোটেল প্রিন্স, হোটেল সিটি এবং যশোর হোটেল। এগুলোর মধ্যে জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেল পাঁচ তারকা মানের। শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ডরমেটরি তিন তারকা মানের।
এনডিসি জানান, ইতিমধ্যে যশোরের হোটেল নয়নে ৩৭ জনকে, হাসান ইন্টারন্যাশনালে ৪৪, হোটেল ম্যাগপাইয়ে ১৭, আরএস হোটেলে সাত, হোটেল ম্যাক্সে ১১ এবং শেখ হাসিনা পার্কের ডরমেটরিতে ছয়জনকে রাখা হয়েছে।
এদিকে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সেখ সালাউদ্দিন শিকদার জানান, যেসব স্থানে ভারতফেরত যাত্রীদের রাখা হয়েছে সেখানে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। ১৪ দিন অবস্থানের পর করোনা নেগেটিভ সনদপ্রাপ্তিসাপেক্ষে এসব যাত্রীকে নিজ বাড়িতে যেতে দেওয়া হবে।
No comments:
Post a Comment