মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের এবারের আসরে সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন যশোরের মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের মেধাবী ছাত্রী ফারজানা ইয়াসমিন অনন্যা।মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশে ৫০ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন অনন্যা।
যশোরের পালবাড়ি এলাকার বিশিষ্ট ঠিকাদার গোলাম সারোয়ার রুনু সাহেবের এক মাত্র কন্যা অনন্যা।তাকে ডাকা হয় মিসস যশোর বলে।অন্য ১০ জন প্রতিযোগীর চাইতে অনন্যাকে একটু আলাদা করা যেতেই পারে। কেননা অনন্যা অন্যদের চাইতে এগিয়ে তার কিছু গুণের কারণে তাকে ডাকা হয় ঢাবির মানবিক কন্যা।
২০২০ সালে সারা বিশ্ব যখন করোনার থাবায় স্থবির, সবাই যখন ঘরবন্দী। ঠিক ঐ সময়ে অনন্যা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে ছিলেন। করোনায় ভয়কে উপেক্ষা করে ছুটে গিয়েছেন মানুষের পাশে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান অনন্যা। সে সময়ে সবাই যেখানে জীবনের নিরাপত্তার জন্য ঘর থেকে বের হয়নি, বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান অনন্যার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা মোটেও সহজ ছিলোনা।
সেই অসাধ্য সাধন করে লকডাউন এর শুরুতে ত্রাণ দিয়েছেন ৭০০ পরিবারকে। শুধু সাহায্য করেই থেমে থাকেননি অনন্যা। লকডাউন এর সময় রাতের বেলায় গরীব-দুঃখী প্রতিবেশীর বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন কেউ খাবার সংকটে আছে কিনা দেখতে। উনি দেখিয়ে দিয়েছেন মানবতার চাইতে বড় কিছু হতে পারেনা, এমনকি নিজের জীবনও না।
এতটুকু পর্যন্ত থেমে ছিলেন না অনন্যা। এই শীতেও ২০০ পরিবারকে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন তিনি। অনন্যা বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ, নারীদের অধিকার ও ধর্ষণ এর বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার। যেখানেই অসংগতি দেখেছেন, প্রতিবাদ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অনন্যার উপস্থিতি অনন্যাকে ঢাবিতে দিয়েছে অনেক ভালো অবস্থান। অনন্য প্রতিভার অধিকারী অনন্যার এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের অনেক পত্রিকায় ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
ফারজানা ইয়াসমিন অনন্যা বলেন, ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল একদিন যশোরকে রিপ্রেজেন্ট করব, যশোরের মানুষের জন্য কিছু করব আর আমাকে ‘মিসস যশোর’ বলে ডাকা হবে। সেরা দশে আসতে পেরে এই স্বপ্নের কাছাকাছি কিছুটা হলেও আসতে পেরেছি বলে মনে করি। আর আমার প্রাণের যশোরকে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের মতো একটি বড় প্ল্যাটফর্মে রিপ্রেজেন্ট করতে পেরে সত্যি আমি গর্বিত এবং আনন্দিত। আমার প্রত্যাশা থাকবে যশোরের সব মানুষ শেষ পর্যন্ত আমাকে সাপোর্ট করবে, এ সাপোর্ট আমাকে চূড়ান্ত লড়াইয়ের অদম্য শক্তি জোগাবে।
No comments:
Post a Comment