গত ২ দিন যাবত দৈনিক শনাক্ত হচ্ছেন সাড়ে ৩ হাজারের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২৫ জন। সংক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকায় করোনা আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালের বেড সংকটের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সংকট দেখা দিচ্ছে।
করোনা আক্রান্তদের জন্য রাজধানী ঢাকার তালিকাভুক্ত ১০ সরকারি হাসপাতালের ৫ টি হাসপাতালে কোনো আইসিইউ বেড ফাঁকা নেই। তালিকাভুক্ত ১০ সরকারি হাসপাতালের ১০৩টি আইসিইউর মধ্যে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৯৩ জন, সে হিসেবে ফাঁকা রয়েছে মাত্র ৭টি বেড।
আজ বুধবার (২৪ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ চিত্র দেখা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত সরকারি কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ১৬টি বেড, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১০টি বেড, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১০টি বেড, মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ১৪টি বেড এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি বেডের সবগুলোতে রোগী রয়েছে।
কেবল শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের ১৬টি বেডের মধ্যে ৪টি, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের ৬টি বেডের মধ্যে ১টি এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫টি বেডের মধ্যে ২টি বেড ফাঁকা রয়েছে।
তালিকাভুক্ত শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল আর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হলেও এখানে করোনাক্রান্ত রোগীদের জন্য আইসিইউ বেড নেই।
অপরদিকে, অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ৯টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য আইসিইউ রয়েছে ১৬৪টি। তার মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ১২৬ জন, বেড ফাঁকা রয়েছে ৩৮টি।
অর্থ্যাৎ, রাজধানী ঢাকার তালিকাভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের মোট ২৬৭টি আইসিইউ বেডের মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ২২২ জন, আর বর্তমানে বেড ফাঁকা রয়েছে ৪৫টি।
অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরের তালিকাভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য আইসিইউ রয়েছে মাত্র ৪৫টি। তার মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ২২ জন, আর বেড ফাঁকা রয়েছে ২৩টি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি খারাপে দিকে। আর এমন অবস্থায় যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টের পাওয়া যাওয়ার সংবাদ আশঙ্কাজনক। একইসঙ্গে দেশের মানুষ যদি এখনও স্বাস্থ্যবিধি এড়িয়ে চলে, মাস্ক না পরে তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। তখন হাসপাতালে জায়গা দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্ট একটা কারণ হতে পারে। তবে মূল কারণ কখনোই না। এক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়ার জন্য মূলত দায়ী আমাদের জীবনাচরণে স্বাস্থ্যবিধিকে গুরুত্ব না দেওয়া। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনসমাগম এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এই মুহূর্তে খুবই জরুরি এবং একইসঙ্গে মাস্ক পরাটাও। ভ্যাকসিন দেওয়ার পড়েও অনেকে রিল্যাক্স হয়ে ঘুরছে। এটাও বিপদজনক হয়ে উঠছে আমাদের জন্য। কারণ, ভ্যাকসিন দিলেই সবার মাঝে অ্যান্টিবডি গড়ে উঠবে আর করোনা সংক্রমণ হবে না- এমনটা কিন্তু কোথাও বলা হয় নাই। সুতরাং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।
No comments:
Post a Comment