যশোরে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাকরণ চলছে। এরই মাঝে ফের বাড়তে শুরু করেছে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের দাপট। অথচ জেলায় গত পাঁচ মাস ধরে অবিশ্বাস্যভাবে কমেছিল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দাবি এই সময় মানুষ কোভিড-১৯ পরীক্ষা কমিয়ে দিলেও সচেতন ছিল। কিন্তু এখন পরীক্ষা সংখ্যা আবার বাড়ছে। তবে মানুষ সচেতনতার বিপরীতে উদাসীনভাবে চলাচল করছেন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন দফা ঘোষিত ফলাফলে যশোর জেলায় নতুন করে ২৩ জন কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
অন্যদিকে মঙ্গলবার জেলায় আরও এক হাজার ৩৯৫ জন করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করেছেন। টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন সিনিয়র সিটিজেন, চিকিৎসক, সেবিকা, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সম্মুখসারির যোদ্ধারা।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তিনটি ল্যাব থেকে ২৪৮ জনের নমুনার ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকি ২২৫ জনের নেগেটিভ এসেছে। সূত্র মতে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে দু’দফায় ঘোষিত ফলাফলে জেলার একশ ৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৪ জন এবং ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ২৪ জনের এন্টিজেন্ট পরীক্ষা করে ৯ জনেরসহ মোট ২৩ জনের নমুনায় কোভিড-১৯ পজিটিভ ফল আসে। খুলনা মেডিকেল কলেজের ল্যাব থেকে ৪০ টি নমুনা পরীক্ষা করে সব কয়টি নেগেটিভ এসেছে। সে হিসাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় মোট চার হাজার ৯৬৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
অপরদিকে এদিন জেলায় এক হাজার ৩৯৫ জন করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করেছেন। মোট ৩৬ টি কেন্দ্র সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর আড়াইটার পর্যন্ত টিকা কার্যক্রম চলে। মঙ্গলবার যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ থেকে টিকা নিয়েছেন ৫০২ জন, পুলিশ হাসপাতাল থেকে আট জন, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান মেডিকেল স্কোয়াড্রনে ৩৭ জন ও যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে ৭০ জন টিকা গ্রহণ করেছেন। এছাড়া, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ১৩০ জন, বাঘারপাড়ায় ১৩০ জন, চৌগাছায় ৪৫ জন, ঝিকরগাছায় ৭৯ জন, কেশবপুরে ১৩৪ জন, মণিরামপুরে ১৯০ জন এবং শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ৭০ জন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক টিকা গ্রহণ করেছেন।
এদিকে জেলায় হঠাৎ করে করোনা আক্রাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পওয়ায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রচার প্রচারণা বাড়িয়েছেন। কিন্তু মানুষের মধ্যে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এতে করে অনেকে ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায় জানান, গত কয়েক মাস জেলায় কোভিড-১৯ পরীক্ষা কমে গিয়েছিল। এ জেলার মানুষ সতর্ক ও সচেতন ছিল। তারা দূরত্ব বজায় রেখে কর্ম করতেন। মাস্ক ব্যবহার করতেন। কিন্তু সম্প্রতি সেগুলোয় ঘাটতি থাকায় করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে।
No comments:
Post a Comment