অনুমোদনহীন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের। এরই ধারাবাহিকতায় বিতর্কিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান মণিরামপুরের রাজগঞ্জ মর্ডান হসপিটাল বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ২০ মার্চ যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান চলাকালে মর্ডান হসপিটাল কর্তৃপক্ষ অনুমোদনের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক তো পরের বিষয়, নিবন্ধিত কোনো সেবিকাও নেই। নোংরা প্যাথলজি কক্ষে টেকনোলজিস্ট হিসেবে যিনি রয়েছেন, তারও কোনো অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি নেই। অথচ তিনি দিব্যি রোগীদের প্যাথলজিকাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করছেন। এ সকল অভিযোগের ভিত্তিতে অপারেশন ও প্যাথলজি বিভাগ বন্ধ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে রাজগঞ্জ মর্ডান হসপিটালে ভর্তি করেন ওই বাজারের ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। এরপরই সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন ওই নারী। জন্মের পরেই গুরুতর অসুস্থ নবজাতককে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। এখানে কয়েক ঘন্টা পর রাত সাড়ে নয়টার দিকে শিশুর মৃত্যু হয়।
এ সকল প্রতিষ্ঠানের দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন রোগীরা। সরকার স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পর থেকেই যশোরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার তদারকিতে স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও জরিমানাসহ বন্ধ করে দিচ্ছে অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যসেবার নামে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ।
সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক বা হাসপাতাল পরিচালনা করতে গেলে বিধি মোতাবেক ৩৬ ধরণের চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির দরকার পড়ে। তিন-চারটি ছাড়া বলতে গেলে এসবের কিছুই নেই রাজগঞ্জ মর্ডান হসপিটালে। অনুমোদনহীন এমন প্রতিষ্ঠান বন্ধে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এমন অভিযান চলমান থাকবে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কোনো স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান চলতে দেয়া হবে না।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, মণিরামপুর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার অনুপ বসু, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার রেহনেওয়াজ প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment