যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ৮ বছরের শিশু সিয়ামকে হুইল চেয়ার প্রদান করেছে জেলা প্রশাসন। যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান শিশু সিয়ামকে এ হুইল চেয়ার প্রদান করেন। গত ৩০ জানুয়ারির মণিরামপুর পৌর নির্বাচনে শিশু সায়েমকে নিয়ে ভোট দিতে আসেন তার পিতা মঈনুল ইসলাম। এসময় সাংবাদিকদের বহনকারী মাইক্রো’তে উঠতে চায় শিশু সিয়াম, কিন্তু তার বাবা বলেছিল ‘ওই গাড়িতে চড়তে নেই।’ একথা শুনে যশোরের সিনিয়র সাংবাদিক সাজেদ রহমান সে গাড়িতে বসিয়ে তার ছবি তুলে পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তার স্ট্যাটাসে সাড়া দিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান শিশু সিয়ামকে হুইলচেয়ার প্রদানের উদ্যোগ নেন। শিশু সিয়ামের দরিদ্র পিতা মইনুল ইসলাম মণিরামপুর বাজারের রাজগঞ্জ সড়কে ছোট্ট পানের দোকান আছে। দিন আনে দিন খায় সে। তারপরও বড় ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। সে এখন মণিরামপুর কলেজে পড়ছে, আর বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ৮ বছরের শিশু সিয়াম বিদ্যালয়ে যেতে পারে না কারণ সে হাঁটতে পারে না, আর তার হুইল চেয়ারও নেই।
সিয়ামকে হুইলচেয়ার প্রদানে উদ্যোগ নেওয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান জানান, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিজের সন্তানের মতো দেখি। সেজন্য সাধ্যের ভিতরে যতটুকু পারি ততটুকু করার চেষ্টা করি।
সাংবাদিক সাজেদ রহমান ৩০ জানুয়ারি লিখেছিলেন, প্রতিবন্ধী ছোট্ট সিয়াম। তার বহুদিনের একটি শখ, সেই শখটাও বড় নয়, ছোট্ট। তার শখ একদিন সে গাড়িতে চড়বে। আজ গিয়েছিলাম সকালে মণিরামপুর পৌরসভার নির্বাচনে। তাহেরপুর কেন্দ্রে সকালে তার বাবা মঈনুলের কোলে চড়ে এসেছে সে। গ্রামে ভোট মানে উৎসব। সেই উৎসবের আনন্দ নিতে বাবার সাথে এসেছিল সিয়াম। সাংবাদিকদের গাড়ি দেখে বাবার কাছে আস্তে আস্তে বলল, বাবা আমি ওই গাড়িতে চড়বো। তার বাবা বলছে, ওই গাড়িতে চড়তে নেই। বাবার কথা শোনার পর ৮ বছরের সিয়ামের খুব মন খারাপ। দেখলাম বাবার কোলে বসে গাড়িতে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখছে। এতেই সে আনন্দ পাচ্ছে। পাশে ছিলাম আমি। তার বাবাকে বললাম-নিয়ে আসেন আপনার পুত্রকে। ও একটু গাড়িতে বসে থাকুক। সিয়াম ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। কোলে তুলে তার বাবা মাইক্রোবাসের একটি সিটে বসিয়ে দিল। শখ পূরণ হওয়ায় কি দারুণ আনন্দ সিয়ামের। ছোট্ট সিয়ামের ছোট্ট সখ পূরণ করতে পেরে আমিও খুশি। সিয়ামের জন্য একটি হুইল চেয়ার দরকার বলে জানিয়েছেন তারা বাবা।
No comments:
Post a Comment