যশোরের চৌগাছায় চাল, ডাল, আটা, মাংশসহ প্রতিটি নিত্যপন্যের দাম হুহু করে বাড়ছে। অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে বেকায়দায় পড়েছেন নিন্ম ও নিন্ম মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষ। বাজার মনিটরিং করে প্রতিটি নিত্যপন্য সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসি।
চলতি বছরে কয়েক দফায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সব ধরনের চালের। দাম বাড়তে বাড়তে বর্তমানে এমন এক পর্যায় উঠেছে যে নিন্ম আয়ের মানুষের কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। বর্তমানে চৌগাছার প্রতিটি হাটবাজারে প্রতি কেজি চাল ৪৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল পৌর এলাকার প্রধান চাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ কেজি মোটা স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা। অনুরুপ ভাবে ১ কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০, সুভল লতা ৫৮ থকে ৬০ প্রতিক চাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা আর বাসমতি চাল ১ কেজি ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। পাইকার ও খুচরা চাল বিক্রেতারা জানান, তারা যখন যে দামে চাল কিনতে পারেন সেই অনুযায়ী চাল বিক্রি করেন। বর্তমানে তাদেরকে আড়ৎ থেকে ৬৬ থেকে ৬৭ টাকা কেজি দরে বাসমতি চাল কিনতে হচ্ছে। দোকানে পৌছানো পর্যন্ত একটি খরচ আছে। বাধ্য হয়ে তারা ৭০ টাকা দরে বাসমতি চাল বিক্রি করছেন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সোয়াবিন তেলের দামও গত এক মাসের ব্যবধানে বেশ বেড়েছে। বর্তমানে ১ লিটার রুপচাঁদা সোয়বিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা আর তীর সোয়াবিন, ফ্রেশ, পুষ্টিসহ বেশ কিছু ব্রান্ডের সোয়াবিন তেল ১ লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। দাম বেড়েছে প্রতিটি ডালে। চৌগাছা বাজারে ১ কেজি মসুর ডাল প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা থেকে ১২০ টাকা দরে। ছোলার ডাল ১ কেজি ৮০ টাকা, বুট ৪০ আর মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি।
চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। ১শ গ্রাম জিরে বিক্রি হতে দেখা গেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। একই অবস্থা গরম মশলার ক্ষেত্রে ১শ গ্রাম এলাচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। আর ১ হালি ডিমের দাম হচ্ছে ৩২ টাকা। চাল, ডাল, তেল, মশলা, ডিমের দাম যখন বৃদ্ধি তখন মাংশের বাজার স্বাভাবিক থাকার কথা না। চৌগাছাতে ১ কেজি খাশির মাংশের দাম ৮০০ টাকা আর গরুর মাংশ ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা। অনুরুপ ভাবে পোল্ট্রি মুরগী ১৪০, সোনালী মুরগী ২৪০ আর দেশি মুরগীর কেজি হচ্ছে ৪০০ টাকা। বাজার দরের অবস্থা যখন আকাঁশ ছুইছুই তখন খেটে খাওয়া মানুষের অবস্থা কী তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মাসিক ৮ হাজার টাকা বেতনে একটি প্রাইভেট কার চালান জনৈক ব্যক্তি। তিনি বাজার করতে এসে সব কিছুর দামের কাছে যেন হার মেনেছে। কথা হলে ওই ব্যক্তি জানান, বর্তমান বাজার দরের কাছে যেন বেঁচে থাকায় দুরুহ ব্যাপার। ৮ হাজার টাকা বেতনে কীভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাবো ভেবে কোনই কুল কিনারা পাচ্ছি না। দিনে ৪শ টাকা হাজিরায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করেন আল আমিন।
তিনি বলেন, চাল তেল মশলা কেনার পর আর পকেটে টাকা থাকেনা। কিভাবে মাছ মাংশ বা ডিম কিনবো ? বাজার দরের পরিবর্তন জরুরী অন্যথায় সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে। বাজার করতে আসা প্রতিটি মানুষের মুখে এমন কষ্টের কথা এখন প্রতি দিনই শোনা যাচ্ছে। বাজার মনিটরিং করে সব ধরনের পণ্য সাধারনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার জোর দাবি জানেিয়ছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসি।
No comments:
Post a Comment