পূর্বশত্রুতার জের ধরে কাউন্সিলর প্রার্থী সোহাগের নির্দেশে পারভেজকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত পারভেজের পিতা সদর উপজেলার বাহাদুরপুর পূর্বপাড়ার বাসিন্দা তুতা বিশ্বাস মামলায় এ কথা উল্লেখ করেন।
হত্যাকান্ডের দিন মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে তুতা মিয়া বাদি হয়ে কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়।
আসামিরা হচ্ছে ঘোপ জেল রোড বউ বাজার এলাকার জলিল হাওলাদারের ছেলে নুর আলম (৩০), নান্টু (২৮), ঘোপ জেল রোড ডিআইজি সড়কের বদিন (২৮), একই এলাকার জুলফি (৩১), ঘোপ জেল রোড বউ বাজার হলদি ওয়ালার বাড়ির নজরুল (২০), ঘোপ জেল রোড বউ বাজারের মৃত জামালের ছেলে শফিকুল ইসলাম সোহাগ (৩৫) সহ অজ্ঞাত ৩/৪ জন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় সোহাগ নামে একজন আটকের কথা শোনা গেলে ও পুলিশ আটকের কথা স্বীকার করেনি।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এমন কোন খারাপ কাজ নেই যে, তারা করে না। আমার একমাত্র ছেলে পারভেজ কেরামবোর্ড তৈরি করে বিক্রি করে। আসামিদের ও সোহাগের সাথে পারভেজ ঘোরাফেরা করতো। বেশকিছু দিন ধরে আসামিদের সহিত পারভেজের দ্বন্দ চলে আসছিলো। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টা ৩৫ মিনিটের সময় ঘোপ জেল রোড বউ বাজারে অবস্থতি জনৈক তসলিমের দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় সোহাগের নির্দেশে আসামিরা ধারালো দেশীয় অস্ত্রসশস্ত্র দা, হাসুয়া, ছোরা নিয়ে পারভেজকে গতিরোধ করে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আসামিরা দা, হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে পারভেজকে গুরুত্বর জখম করে। আসামিদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য পারভেজ দৌড়ে তসলিমের বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে। আসামিরাও পারভেজের পিছু নিয়ে তসলিমের বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে আবারো কোপাতে থাকে। আসামিরা পারভেজের বুকে, পিঠে, গলায়, ডান হাতের কবজি, কনুইতে ও পায়ে কুপিয়ে রক্তাত্ত জখম করে। আমার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে আসামিরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। ঘটনা স্থলের আশেপাশে থাকা অনেকেই আসামিদের চলে যেতে দেখে। স্থানীয়রা পারভেজকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার আব্দুর রশিদ পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পারভেজকে মৃত ঘোষনা করেন। ডাক্তার রশিদ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই পারভেজের মৃত্যু হয়।
হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অভিযোগে ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শফিকুল ইসলাম সোহাগের আটকের কথা শোনা গেলেও পুলিশ আটকের কথা স্বীকার করেনি।
কোতয়ালি থানার ওসি মোহম্মদ মনিরুজ্জামানের কাছে আটকের কথা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি। তবে সোহাগকে আমরা নরজদারিতে রেখেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য পারভেজ হত্যাকান্ড দেখে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সোহাগ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পারভেজ হত্যা মামলায় সোহাগকে আসামি করায় বর্তমানে পুলিশ প্রহারায় সোহাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
No comments:
Post a Comment