যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাস্তা পেরোলেই মোমিননগর সমবায় মার্কেট। মার্কেটের ভিতর সজীব এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ফটোকপির দোকানে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল জাল কাগজপত্র তৈরির কারবার। যশোর বিআরটিএ’র গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, রেকর্ড রুম, দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা রাজস্ব, জেলা পুলিশসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাগজপত্র সবই জাল করছে চক্রটি। নিখুঁত এদের প্রতারণা। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এগুলো ভুয়া-নকল। এসব জাল কাগজপত্র তৈরির কারবার চলছিল জেলা প্রশাসক যশোরের কার্যালয়ের ঠিক সামনের মার্কেটে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় যশোর শহরের মোমিননগর সমবায় মার্কেটে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরির সরঞ্জামসহ, ১টি কম্পিউটার, দোকানের মালিকসহ ২ জনকে আটক করে। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ চন্দ্র।
ভুয়া কাগজপত্র তৈরির দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত দোকানের মালিক সাজ্জাদুর রহমানকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- ও তার কর্মচারী মনিরুল ইসলামকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদ-সহ একই সাথে দুইশ’ টাকা জরিমানা করেন। দোকানের মালিক সাজ্জাদুর রহমান যশোর সদর উপজেলা ভেকুটিয়া গ্রামের মৃত শাহাদৎ হোসেনের ছেলে এবং জেলা বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহম্মেদ রাসেল হত্যা মামলার প্রধান আসামি। অপর দ-প্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম একই উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মোবারেক মোল্যার ছেলে।
সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ চন্দ্র জানান, সম্প্রতি যশোর রেকর্ড রুমে কয়েকটি জমির ভুয়া আরএস খতিয়ান ও সিএস খতিয়ান তৈরি করে ভুয়া স্বাক্ষর ও জাল সিলের মাধ্যমে যশোর রেকর্ড রুম থেকে জমির পর্চা নেওয়ার অভিযোগ উঠে। এ ধরনের প্রতারণার শিকার যশোর রেকর্ডরুমে অভিযোগ করলে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে সজীব এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ফটোকপির দোকানে যশোরের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ভুয়া সিল পাওয়া গেছে। তাছাড়া দোকানের কম্পিউটারে যশোরের বিভিন্ন দপ্তরের কাগজপত্র তৈরির ডকুমেন্টও রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ চক্রটি দীর্ঘ দিন ধরে জেলা প্রশাসকের রেকর্ডরুমসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে জাল স্বাক্ষর বা সিল ব্যবহার করে বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে আসছে।
No comments:
Post a Comment