যশোরে পুলিশ সদস্যকে মারপিটের অভিযোগে পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপুকে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে আটকের পর মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
তবে আটকের পর সোমবার রাতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালানো হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে এ তাণ্ডব চালিয়েছে।পুলিশের ৪০-৫০ জনের একটি টিম এ ভাঙচুর চালিয়েছেন তা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।। অবশ্য পুলিশ বলছে, তারা আসামি ধরতে অভিযানে ছিল। তবে পুলিশ এ ব্যাপারে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,শহীদ মিনার এলাকায় সাদা পোশাকে থাকা দুজন পুলিশ সদস্য নারী নিয়ে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় বসেছিলেন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন তাদের মারপিট করেন। হট্টগোল দেখে পাশের শেখ আবু নাসের ক্লাব থেকে মাহমুদ হাসান বিপু এগিয়ে যান। মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। তিনি মারপিটে জড়িত নন। পুলিশ তাকে রাত পৌনে ৯টার দিকে তুলে নিয়ে গেছে।
এদিকে, বিপুকে আটক নিয়ে দিনভর বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। তাকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় হয়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।তাকে শারীরিক নির্যাতন করে পুলিশ। তার দুই পায়ে আঘাত করা হয়।
তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপও এভাবে ভাঙচুর করে না, যেভাবে পুলিশ করেছে। প্রতিবেশিরা বেরিয়ে এলে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। শিশুরা যে আতঙ্কিত হয়ে মারা যায়নি, তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। কোনো সভ্য দেশে এটা সম্ভব না। পুলিশ কোনো অভিযোগ ছাড়াই যদি একজন জনপ্রতিনিধির সাথে এমন আচরণ করতে পারে তাহলে কোন দেশে বসবাস করছি? এর উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। মানুষের নিরাপত্তাটা কোথায়?’
তিনি দাবি করেন, হামলাকারীরা ১০-১২টি গাড়িতে আসছে, তা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।
কাউন্সিলর হাজি সুমনের বাবা ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, ‘রাত দুইটা থেকে আড়াইটার মধ্যে পোশাক পরা একদল পুলিশ আমার বাড়িতে ঢুকে গেট ভাংচুর করে। সিসিটিভি ক্যামেরা, জানালা, দরজা ভাঙচুর করে। অপরাধ কী প্রশ্ন করলে গেট খুলতে বলে। একপর্যায়ে গালিগালাজ করে চলে যায়।’
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে যশোরের মাটিতে পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক যে ঘটনা সংঘঠিত হয়েছে তা নজিরবিহীন। সামরিক স্বৈরাচার সরকার বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকার বলেন কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপির বাড়ির নিচে প্রেসে হামলা করেছে। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল খালেক, মোস্তফা, যুবলীগ নেতা মনসুরসহ বিভিন্ন নেতার বাড়িতে হামলা হয়েছে। পুরো শহরজুড়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছে পুলিশ। আমরা এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আহ্বান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বাড়িতে এ ধরনের হামলার বিচার করা হোক।’
তবে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলছেন, বিপু ও তার লোকজন পুলিশ সদস্যকে মারপিট করে আইন ভঙ্গ করেছে। ওই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ ভিত্তিহীন। এর সাথে পুলিশ জড়িত নয়। সব পলিটিকস।
তারপরও বিষয়টি তদন্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment