যশোরে বালু ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান বিষে হত্যার ঘটনায় তরিকুল ইসলাম, আকাশ হোসেন ও নাইম হোসেন নামে তিনজনকে আটকের গুঞ্জন উঠেছে। তরিকুল ইসলাম সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের আনছার আলীর ছেলে, আকাশ একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে এবং নাইম শামসুদ্দিনের ছেলে। তবে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। এদিকে বিষে হত্যার মাস্টার মাইন্ড ফেরদাউস হোসেন ও কিলার সাগরসহ অন্যদের এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ।
পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বালু ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান বিষেকে। এই ঘটনায় ওইদিন রাতেই নিহতের ভাই শুভ হাওলাদার বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ৬জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার পলাতক আসামিরা হলো, যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে এবং হত্যাকা-ের মাস্টার মাইন্ড ফেরদাউস হোসেন, সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে হত্যাকা-ের কিলার সাগর হোসেন ও ওয়াহিদের ছেলে রুবেল।
বাদী আরবপুর তালপট্টির মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে এবং নিহতের ভাই শুভ হাওলাদার মামলায় উল্লেখ করেছেন, আসামিরা সংঘবদ্ধ দলের সক্রিয় সদস্য। তার ভাই আমিনুর রহমান বিষে বালুর ব্যবসা করতেন। ব্যবসায়িক সূত্রে আসামি সাগরের সাথে তার লেনদেন হয়। সে কারণে সাগরের কাছে বেশ কিছু টাকা পেতেন বিষে। ওই টাকা চাওয়া নিয়ে সাগরের সাথে তার বিরোধের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায় সাগর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার ফেরদাউস হোসেনের স্মরণাপন্ন হন। ফেরদাউস বিষেকে খুন করার পরামর্শ দেন। ২১ ডিসেম্বর সকালে বিষে বালু ক্রয় করার জন্য ভেকুটিয়া গ্রামে যান। এসময় সাগরের সাথে দেখা হলে পাওনা দেয়ার জন্য বলেন বিষে। টাকা চাওয়ায় বিষের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে খুন করার হুমকি দেয় সাগর। এরপর বিষে সেখান থেকে বাড়ি ফিরে চলে আসেন। কিন্তু সাগর অন্য আসামির সাথে নিয়ে বিষেকে খুন করার জন্য ফেরদাউসের সাথে শলাপরামর্শ করে। একইদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ি থেকে গোসল করে আরবপুর মোড়ে আসলামের হোটেলে ভাত খেতে যান। এরই মধ্যে ফেরদাউসের কথামত সাগর, আকাশ, তরিকুল, নাইম ও রুবেলসহ আরো কয়েকজন সেখানে ধারালো ও দেশিয় অস্ত্রশস্ত্রসহ হোটেলের মধ্যে যায়। এসময় ফেরদাউসের হুকুমে সকল আসামি বিষের শরীরে একাধিক স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এসময় বিষের চিৎকারে সিরাজুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম ও হোটেল মালিক আসলাম হোসেন এগিয়ে এলে ওই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে চলে যায়। এরপর তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এই ব্যাপারে নিহতের ভাই শুভ হাওলাদার বাদী হয়ে ওইদিন রাতেই ৬ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
এদিকে এই ঘটনার পর থেকে বিভিন্নস্থানে খুনিদের আটকের জন্য অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। অভিযানকালে তরিকুল ইসলাম, আকাশ হোসেন ও নাইম হোসেনকে আটকের গুঞ্জন উঠেছে। তবে পুলিশ আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এছাড়া এই খুনের মাস্টার মাইন্ড ফেরদাউস হোসেন ও কিলার সাগরসহ অন্যরা এখনো রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই সেকেন্দার আবু জাফর বলেছেন, আসামিদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
No comments:
Post a Comment