শার্শা উপজেলার ত্যাগী ও অবহেলিত ১৫৩ প্রবীন নেতা-কর্মীকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে শতবর্ষী নেতাও আছেন। যাদের অনেকেই মহান মুক্তি যুদ্ধের সময় লড়াই-সংগ্রাম করে এদেশ স্বাধীনে অবদান রাখেন। এরপর ৭৫ পরবর্তী সময়ে অত্যাচার-নির্যাতন উপেক্ষা করেও এ্লাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি টিকিয়ে রেখেছিলেন তারা। তাদের সম্মাননা জানাতেই এই আয়োজন করেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন। প্রবীণ এসব রাজনীতিবীদদের উত্তরীয় ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পরে নিজ হাতে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে অতিথিদের তিনি অভিবাদন জানান ।
আজ শনিবার বিকেলে বেনাপোল শহীদ মিনার ও বলফিল্ড মাঠে এ ব্যতিক্রর্মী এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উলাশী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল আলম।
কৃতজ্ঞতা সমাবেশে মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, গত শতাব্দীর প্রবীণ ও বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা এখন বয়সের ভারে ন্যুজ। অথচ তাদের লড়াই আর সংগ্রামেই আমরা পেয়েছি একটি ভুখণ্ড আর স্বাধীনতা। অথচ তারা এখন সমস্ত আলো আর আলোচনার বাইরে। যারা এক সময় ছিলেন শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রাণ, সততা আর নিষ্ঠার সাথে তারাই দলকে দৃঢ় সাংগঠনিক ভিত্তির উপর দাড় করিয়েছিলেন দলকে। তাদের রয়েছে গৌরবজ্জল ইতিহাস। অথচ আজ তারা অভিমানে নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন । এই প্রবীণ নেতারা নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের জন্য লড়াই করেছিলেন। তাদের অবদানের জন্যই আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। দলের নেতাকর্মীদের সসুময় যাচ্ছে। অথচ আমরা তাদের ভুলে গেছি।
মেয়র লিটন আরো বলেন, দেরিতে হলেও যারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানাতেই আজকের এই সমাবেশ। এ কৃতজ্ঞতার মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আত্মার শান্তি হবে। কারণ আপনারা তার আদর্শের রাজনীতি করেছিলেন। আপনারা তার কন্যাকে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ এনেছিলেন। আপনারা রাজনীতি করে তার কন্যাকে এদেশে প্রতিষ্ঠিত করে আজ পদ্মা সেতু নির্মাণে অবদান রেখেছেন। কৃতজ্ঞতাতো আপনাদের জানাতে হবেই, তা না হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবেনা।
সম্মাননা পাওয়া প্রবীণ রাজনীতিক মোস্তফা আহসান ফিরোজ অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, এখনো এরকম শ্রদ্ধা জানানো নেতা আওয়ামী লীগে আছে তা ভাবতেই আমার চোখে জল আসছে। আমরা আজ গর্বিত। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে যেভাবে সম্মানিত হলাম, তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলব না।
শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন বলেন, শার্শায় আমরা ভালো নেই। কারণ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আর আওয়ামী লীগের হাতে নেই। আমরা পোড় খাওয়া নেতাকর্মীরা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে বেঁচে আছি। কেউ আমাদের খোঁজও নেয়না।
কৃতজ্ঞতা সমাবেশে শার্শার ১১টি ইউনিয়নের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা বন্দর নগরী বেনাপোলের বিভিন্ন সড়ক দিয়ে মিছিল নিয়ে বেনাপোল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বলফিল্ড মাঠে সমবেত হন। শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সমাবেশস্থল।
No comments:
Post a Comment