যশোর স্বাস্থ্য বিভাগে আবারও চড়াও হয়েছে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। চাঁদার দাবিতে যশোর সদর ও চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ ৮ ডাক্তার ও দু’কর্মচারীকে সপরিবারে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।একই সাথে স্বাস্থ্য বিভাগের ১০জনের কাছে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকিতে চরম আতংক ছড়িয়েছে। এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি ও চৌগাছা থানায় জিডি হয়েছে। ঘটনায় ভুক্তভোগীরা ব্যক্তিগত ও পরিচিতজনদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত পুলিশি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে পুলিশ মাঠে নেমেছে। পুলিশের আইটি স্পেশালিস্ট টিমও কাজ করছে।
১১ নভেম্বর দুপুর ১টা ৪ মিনিটে বেজে ওঠে যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মীর আবু মাউদের ব্যবহৃত ০১৭২৬-৯৩২৯০১ নাম্বারের ফোন সেটটি। অপর প্রান্তের ০১৮৪২-৪০৫৬৭১ নাম্বার থেকে ফোন করে বলা হয়, লাল পতাকা বাহিনীর কমান্ডার বলছি। বলা হয়, চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা না দিলে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে বলে শাসানো হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই ওই একই নাম্বার থেকে অফিসের প্রধান সহকারীর মোবাইলেও কল করে চাঁদা চাওয়া হয়।
এছাড়াও একই দিন যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার লুৎফুন্নাহারসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৭ ডাক্তারের মোবাইলে ফোন দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। চাঁদাবাজ চক্র ০১৮১৪-৫৭০৬৭১ এই নাম্বারসহ একাধিক নাম্বার থেকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলেছে। মেডিকেল অফিসার সুরাইয়া পারভীনের ০১৭১৭-৪৫০৫৪৪, আব্দুল্লাহ আল মামুন ০১৭২২-৮৬৫২৮৮, আসিফ রায়হানের ০১৬৮৪-৮৮২০৮৪, নাহিদ সিরাজ ০১৭১৭-৬৬৫৮৩২, উত্তম কুমার রায় ০১৭৪০-২৩৪০৩৪, তোহিদুজ্জামান ০১৯৩৬-২৬৩৬৫০ ও প্রধান সহকারী আবুল কাশেমের ০১৯৪৬-৫০৯১৭০ নাম্বারে ফোন করে হুমকি দেয়া হয়েছে। এসময় পরিবারের সদস্যদের খুন গুম করার হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটছে ওই ডাক্তারগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যদের।
এ ব্যাপারে করা যশোর কোতোয়ালি থানায় জিডি নাম্বার ৬৯১ ও চৌগাছা থানায় জিডি নাম্বার ৪১৯।
এর আগে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীনের মুঠোফোন ০১৭১৬-৪৪৮৩৮২ নম্বরে কল দেয়া হয় নিষিদ্ধ ঘোষিত দল জনযুদ্ধের কর্মী পরিচয়ে। জনযুদ্ধের শিকদার মহিউদ্দিন পরিচয় দিয়ে ০১৭০৭-৩৯০৫১৫ নম্বর থেকে ফোন করা হয়। বলা হয় জনযুদ্ধের নেতা বিপ্লব বসুর পক্ষে ফোন করেছেন। চাঁদা না দিলে তার স্ত্রী সন্তানদের তুলে নিয়ে হত্যা গুমের হুমকি দিয়ে গালিগালাজ করা হয়। এ ব্যাপারে থানায় জিডি করেন তিনি। এরপর এক শিক্ষকের কাছে চাঁদা চাওয়া হয় ফোন করে। বিষয়টি তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৗহিদুল ইসলামকে অবহিত করেন। এর আগে ২০১৮ সালের ১৩ মে একটি প্রতারক চক্র অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং টুলস ব্যবহারের মাধ্যমে যশোরের সাবেক সিভিল সার্জন ও বর্তমানে যশোরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায়ের ব্যবহৃত ০১৭১১-৭৮৫১৬৫ মোবাইল নম্বরটি ক্লোন করে প্রতারক চক্র অধঃস্তনদের কাছে ফোন করে অর্থ দাবি করে।
সুত্রঃ গ্রামের কাগজ
No comments:
Post a Comment