নূর নাজমা আক্তার ওরফে লুপা তালুকদার, কখনো মানবাধিকারকর্মী, কখনো সাংবাদিক এমন আরো নানান পরিচয়ের আড়ালে প্রতারণাই তার মূল পেশা।
চাকরি দেয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। হত্যা মামলার আসামি লুপা নিজেকে আওয়ামী পরিবারের সদস্য দাবি করলেও তার বাবা একজন চিহ্নিত রাজাকার।
মাত্র তিনদিনের মধ্যে চাকরি দেয়ার কথা বলে পটুয়াখালীর মিজানের কাছ থেকে ২০১৮ সালে দুই কিস্তিতে লুপা তালুকদার হাতিয়ে নেন ১৩ লাখ টাকা। দিন, মাস বছর পেরিয়ে গেলেও চাকরি আর হয়না। পাওনা টাকা চাইতে গেলে উল্টো মেলে হুমকি। চাকরি দেয়ার নামে এভাবেই অনেকের কাছ থেকে লুপা হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। নিজেকে পরিচয় দেন সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে।
ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান বলেন, "তিনি বলেছিলেন, (তো চাকরি দেয়া তো আমার ওয়ান-টুর ব্যাপার বিভিন্ন মন্ত্রি আমার হাতের মুঠোয়। আমি সাংবাদিকদের সাংবাদিক) দুইবারে ১৩ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এখন তা চাইলে জেলে ভাত খাওয়াবে বলে হুমকি দেয়।"
তার ফেসবুক প্রোফাইলে দেখা যায় তিনি অগ্নি টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কাজ করেছেন বেশকটি গণমাধ্যমে। নিজেকে দাবি করেন আওয়ামী পেশাজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলে। বাগিয়ে নিয়েছেন জাতীয় পুরষ্কারও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে পথশিশু জিনিয়া অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর লুপা তালুকদারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে আসতে থাকে বিস্তর অভিযোগ। ২০০৩ সালে পটুয়াখালীর গলাচিপা থানায় লুপা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। ২০১৩ সালে ঐ মামলার অভিযোগপত্র থেকে লুপা রাজনৈতিক বিবেচনায় রেহাই পান।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, 'লুপা তালুকদারের অতিতে তার বিরূদ্ধে একটা মাডার মামলা ছিল। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো কিছু অভিযোগ সে বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি।'
এক বছর আগে হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজার এই বাসায় ভাড়া থাকতেন লুপা। ভাড়া বাবদ বাকি পড়েছিল ৪ লাখ টাকা। একসময় বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। লুপার বাবা হাবিবুর রহমান ওরফে নান্না তালুকদারসহ পরিবারের দুই সদস্য ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন।
No comments:
Post a Comment