যশোরে বাকপ্রতিবন্ধী এক যুবতীকে ধর্ষণ ও হত্যার অপরাধে হাবিবুর রহমান খাঁ নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেছেন আদালত।সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) টি এম মুসা এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হাবিবুর রহমান খাঁ যশোর সদর উপজেলার সালতা গ্রামের আবুল কাশেম খাঁর ছেলে।
মামলার বিবারণে জানা যায়, সদর উপজেলার সালতা গ্রামের শহর আলী শেখের মেজ মেয়ে বাকপ্রতিবন্ধী রত্না (১৮) এলাকার জনৈক আকবার মাস্টারের বাড়িতে কাজ করতেন। সেই সুবাদে একই গ্রামের আবুল কাশেম খাঁর ছেলে হাবিবুর রহমান খাঁর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মাঝে-মধ্যে হাবিবুর রহমান খাঁ তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়েও যেতেন। ২০১৭ সালের ২৮ মে দুপুর ১২টার দিকে হাবিবুর রহমান খাঁ ও একই গ্রামের ইশারত আলীর ছেলে মন্টু বাড়ি থেকে রত্নাকে ডেকে নিয়ে যায়।
গ্রামের বুড়ো মার জঙ্গলের কাছে গেলে বিষয়টি দেখতে পান ওসমানপুর গ্রামের মৃত জহর আলী শেখের ছেলে খায়রুল শেখ। এ সময় খায়রুল তারা কোথায় যাচ্ছে জানতে চান। জবাবে মন্টু তাকে বলে, ‘আমরা রত্নাকে নিয়ে যাচ্ছি। এক ঘণ্টা পর এসো তোমার (খায়রুল শেখ) সাথে কথা বলবো।’ কিন্তু এরপর রত্না আর ফিরে না আসায় খায়রুল শেখসহ অন্যরা ঘটনাটি তার বাবা শহর আলী শেখকে জানান।
এই খবর পেয়ে শহর আলী শেখ অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান খাঁ ও মন্টুকে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু তাদের কোথাও পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি রত্নাকেও। ফলে শহর আলী শেখের বদ্ধমূল ধারণা হয় যে, উল্লিখিত দুইজন তার মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে। ঘটনার তিনদিন পর ৩১ মে গ্রামের মেজের মোল্লার কবরস্থানে রত্নার লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ফুলবাড়ি ক্যাম্পের পুলিশ সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা শহর আলী শেখ একই বছরের ১৪ জুন হাবিবুর রহমান খাঁ ও মন্টুকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। পরে আদালতের আদেশে ২ জুলাই কোতয়ালী থানায় সেটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
তদন্ত শেষে পুলিশ উল্লিখিত দুইজনসহ একই এলাকার ইব্রার ছেলে ইকবালকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
এ মামলায় আসামি হাবিবুর রহমান খাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। মামলার অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেন।
No comments:
Post a Comment