রিফাত হত্যা মামলা: প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় কাল - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

as

a1

Monday, September 28, 2020

রিফাত হত্যা মামলা: প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় কাল

 


বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ২৪ আসামির মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জনের বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আগামীকাল রায় ঘোষণার দিন। বাকি ১৪ জনের বিচারিক কার্যক্রম বরগুনার শিশু আদালতে চলমান।

প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ১ নম্বর রিফাত ফরাজী। বরগুনার ধানসিঁড়ি সড়ক এলাকার দুলাল ফরাজীর বড় ছেলে। রিফাত শরীফ হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সরাসরি অংশ নেয় সে। বন্ড গ্রুপ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম রিফাত ফরাজী। কাজ করতো কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত নয়ন বন্ডের ডান হাত হিসেবে।  জড়িত ছিল মাদক ব্যবসা ও সেবনে। রয়েছে একাধিক ছিনতাই ও ছাত্রদের মেসে লুটপাটের অভিযোগ।  রিফাত শরীফকে হত্যার আগে এক প্রতিবেশীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সে।

মামলার দুই নম্বর আসামি কিশোর গ্যাং বন্ড গ্রুপের আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া গ্রামের কালাম আকনের ছেলে।  মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের বিষয়েও জানা ছিল তার। হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে সে আগে থেকেই জানতো।  ঘটনার দিন কলেজের ভেতরে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা ও হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়।

বন্ড গ্রুপের আরেক সক্রিয় সদস্য কলেজিয়েট স্কুল রোডের মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত মামলার তিন নম্বর আসামি। পরিকল্পনার অনুযায়ী রিফাত শরীফকে কলেজ গেট থেকে কলার ধরে ক্যালিক্স একাডেমির দিকে নিয়ে যায় সিফাত। সেখানে রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী ও নয়ন বন্ড রিফাত শরীফকে এলোপাথারি কোপানোর সময় অন্যদের সঙ্গে এলাকাটি ঘিরে রাখতে সহায়তা করে সিফাত।

চার নম্বর আসামি কলেজ রোড এলাকার রফিক আলী খানের ছেলে গ্যাংয়ের আরেক সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়। হত্যা পরিকল্পনায় অংশ নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী সকালেই কলেজ গেটে অবস্থান নেয় সে। রিফাত শরীফকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় সামনে থেকে সাধারণ মানুষ সরানোর দায়িত্বে ছিল হৃদয়। অন্য আসামিরা অস্ত্র আনতে গেলে হৃদয় লাঠি নিয়ে আসে।

শহরের উপকন্ঠে লাকুরতলা গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে মোহাম্মদ হাসান মামলার পাঁচ নম্বর আসমি। হত্যার সময় পাহারাদারের ভূমিকায় ছিল সে। সকালেই কলেজের গেটে অবস্থান নিয়ে রিফাত শরীফ যাতে পালাতে না পারে সে বিষয়ে সে নজর রাখছিলো।

ধানসিঁড়ি রোডের মোহাম্মদ কালাম খানের ছেলে মামলার ছয় নম্বর আসামি মোহাম্মদ মুসা, বন্ড গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। রিফাত শরীফ যাতে পালাতে না পারে সে জন্য পূর্ব দিকে অবস্থান নেয় সে। হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মুসার নামে আছে মাদক ও অস্ত্র মামলা। সে এখনও পলাতক।

পুলিশের চার্জশিট অনুযায়ী মামলার সাত নম্বর আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফের হত্যার পরিকল্পনাকারী। প্রথমে মামলার সাক্ষি রাখা হলেও তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিন্নির পরিকল্পনায় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী হত্যাযজ্ঞ বাস্তবায়ন করে।  রিফাত শরীফ ও নয়ন বন্ড এর সংগে দ্বৈত প্রেমের সম্পর্কের কারণে মনোমালিন্য হওয়ায় এই হত্যার পরিকল্পনা করেন মিন্নি।  হত্যার অভিযোগ থেকে নিজেকে আড়াল করতেই রিফাত শরীফকে বাঁচানোর নাটক করে সে।

রাফিউল ইসলাম রাব্বি রিফাত হত্যা মামলায় প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেওয়া নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। হত্যাকান্ডে অংশ না নিলেও মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাতকে আশ্রয় ও পালাতে সহযোগীতা করে রাব্বি। সদর উপজেলার উরবুনিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ছেলে রাব্বি মামলার আট নম্বর আসমি।

নলী মাইঠা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল লতিফ খানের ছেলে মোহাম্মদ সাগর প্রাপ্ত বয়স্ক আসামিদের মধ্যে নয় নম্বর। 'বন্ড 007' মেসেঞ্জার গ্রুপের সক্রিয় সদস্য।  অভিযোগ পত্রে তাকে হত্যায় প্ররোচণাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ হত্যার দিন সবাইকে কলেজে দেখতে চাই রিফাত ফরাজীর এমন পোস্টের পর তার নিচে সাগর বিজয়সূচক চিহ্ন দিয়ে ছিলো। এছাড়া হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কেও সবই জানা ছিলো তার।

প্রাপ্ত বয়স্ক আসামিদের মধ্যে সব শেষ কামরুল ইসলাম সায়মুন বরগুনা শহরের ডিশ ব্যবসায়ী কাওসার আহমেদ লিটনের ছেলে। নিজে পরিকল্পনা বা হত্যার সঙ্গে জড়িত না হলেও সব কিছু জেনে নিজের মোটরসাইকেল দিয়ে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রাব্বি আকনকে পালাতে দেয় সে।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad