বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যশোর জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, প্রতারণা ও একটি হত্যা মামলা থেকে কৌশলে নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন সদর উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা। সোমবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এসব অভিযোগ করেন।
আনোয়ার হোসেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এর আগে রোববার একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, যশোর-৬ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার তাঁকে ‘হত্যার পরিকল্পনা’ করেছেন। আনোয়ারের সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন হিসেবেই দুপুরে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের নেতারা।
আনোয়ার হোসেন বিপুল ছাত্রলীগ পরিচয় ব্যবহার করে নানা অপকর্ম ও অবৈধ ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন করেছে। আর সে তার এই অপকর্ম ঢাকতে মালিক ও বিল্ডার্স কর্তৃপক্ষকে হুমকি ধামকি দিয়ে শহরের গাড়িখানা রোডে নদী বাংলা কাসেম টাওয়ারে কয়েকটি ফ্লোর দখলে নিয়ে একটি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও ফাতেমা টেক সলিউশন নামে ব্যবসা করছে।
ছাত্রলীগের করা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এম এম রবিউল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আনোয়ার হোসেন ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। এখন তাঁকে সতর্ক করা হচ্ছে। ছাত্রলীগকে নিয়ে খেললে যশোর ছাত্রলীগ তা বরদাশত করবে না। ওই বক্তব্যে রবিউল ইসলাম অভিযোগ করেন, আনোয়ার হোসেন বিপুল ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদসহ উঠতি বয়সী কিশোরদের মাদকের পথে ঠেলে দিয়ে টাকা আয় করেছেন। মাদকের সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত হওয়ায় ছালছাবিল আহমেদকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ ছাড়া তিনি যশোর টাউন হল মাঠে বাণিজ্য মেলার নামে ‘ওঠাও বাচ্চা’ লটারি প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পকেট ফাঁকা করেছেন। সাগরদাঁড়িতে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে হওয়া মধুমেলাতে অশ্লীল নৃত্য, মাদক ও জুয়ার আসর বসিয়ে এলাকার সুস্থ সংস্কৃতিও ধ্বংস করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাঈমুল ইসলাম হত্যাকা-ে আনোয়ার হোসেন বিপুল এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন। মামলায় ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা শাখার আরও কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। কিন্তু আনোয়ার হোসেন বিপুল অপকৌশলে মামলার অভিযোগপত্র থেকে নিজের নাম অপসারণ করিয়েছেন। আনোয়ার হোসেন বিপুলের কর্মকা- সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অবগত করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান, সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমেল হোসেন, জাবেদ উদ্দীন, পৌর কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দীন কবির, চূড়ামনকাঠি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আওয়াল, নরেন্দ্রপুর শাখার সভাপতি শাহিন আলম, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দেয়াড়া শাখার সভাপতি মানিক হোসেন, নওয়াপাড়া শাখার সভাপতি সালাউদ্দীন প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment