দৈনিক স্পন্দনের নিজস্ব প্রতিবেদক সাংবাদিক বিল্লাল হোসেনের এক নিকটাত্মীয় অসুস্থ হয়ে মঙ্গলবার রাত ১০ টা ২০ মিনিটে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন।
চিকিৎসক আহমেদ তারেক শামস তাকে ভর্তি করে সিসিইউতে পাঠান। সেখানে আনার পর ১০ টা ২৪ মিনিটে রোগীকে দেখে কক্ষে চলে যান দায়িত্বরত অনারারী চিকিৎসক জান্নাত রিধি। পরে ভর্তি টিকিট (ব্যবস্থাপত্র) পাঠানো হয় তার কাছে। কিন্তু তিনি রোগীর ব্যবস্থাপত্র না লিখে ওষুধ কোম্পানির ২ জন প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাত করছিলেন।
এ সময় সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন কক্ষের মধ্যে গিয়ে বলেন ম্যাডাম ব্যবস্থাপত্রটা দিয়ে দেন। রোগীর অবস্থা খারাপ মনে হচ্ছে। সাংবাদিক বিল্লাল হোসেনকে দেখেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ডা. রিধি। ডা. রিধি এ সময় বলেন ‘আমি মনে মনে ভাবতাম কবে আপনাকে সিসিইউতে পাবো। পেয়েও গেলাম। রোগী এনেছেন তাইতো। আমি চিকিৎসা দেবো, কিন্তু দেরি হবে। কারণ রোগীটা আপনার। আর আপনি রোগী হলেতো দেখতাম না। বাইরে যান অপেক্ষা করেন’। উল্লিখিত কথাগুলো ছাড়াও ডা. রিধি একনাগাড়ে বলতে থাকেন মুখে মাস্ক পরলেও আমি আপনাকে ঠিকই চিনেছি সাংবাদিক। আমাকে চিনেছেন তো? না বললেই তিনি নিজের মুখ থেকে মাস্ক সরিয়ে বলেন এবার চিনেছেন। সাংবাদিক বিল্লাল আরো জানান, তখন আমি জানতে চাই এমন করে বলছেন কেনো ম্যাডাম। আমার সাথে আপনার কোন শত্রুতা আছে। জবাবে বলেন কেনো মনে করতে পারছেন না পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডের ঘটনাটি। আপনি একজন রোগীর চিকিৎসা দেয়া নিয়ে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন। তখন আমি বলি ম্যাডাম আপনার মনে হয় ভুল হচ্ছে। আপনার সাথে সার্জারি ওয়ার্ডে এমন ঘটনা কখনো ঘটেছে বলে মনে করতে পারছিনা। ডা. রিধি বলেন মনে করে দেখেন খারাপ ব্যবহার করার কিছুক্ষণ পর সেখানে মনিরুজ্জামান লর্ড স্যার গিয়েছিলেন। আমি বলি ম্যাডাম আমার ঠিক মনে পড়ছেনা। আপনি রোগীর ব্যবস্থাপত্রটা দেন। বিষয়টি নিয়ে পরে কথা হবে।
তখন তিনি বলেন ব্যবস্থাপত্র দিতে দেরি হবে, আপনি বাইরে যান। তখন বেরিয়ে আসি। অপেক্ষায় থাকি চিকিৎসকের কক্ষের দরজার সামনে। ঘড়ির কাটা তখন ১০ টা ৫০ মিনিট। আমি ফের চিকিৎসকরে কক্ষে গিয়ে জানতে চাই ব্যবস্থাপত্রটা হয়েছে কিনা। তিনি বললেন হয়ে গেছে। কিন্তু এখন দেবোনা। আমি বললাম কেনো দেবেন না। ব্যবস্থাপত্রটা দেন অন্তত ওষুধগুলো কিনতে যায়। তিনি তখনও ব্যবস্থাপত্র আটকে রেখে বলেন দেখছেন না অন্য রোগীর ব্যবস্থাপত্র লিখছি। এগুলো শেষ হোক একসাথে দেবো। অনেক কাকুতি মিনতির পর ১০ টা ৫৬ মিনিটে রোগীর ব্যবস্থাপত্র দিয়ে বলেন শুধু আপনার কারণে রোগীর ব্যবস্থাপত্র দেরি করে দিলাম।
এই বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, অনারারী ডা. জান্নাত রিধির এমন আচরণের বিষয়টি রাতেই আমাকে জানানো হয়। আমি তার সাথে কথা বলেছি। তিনি ঘটনার পুরোটা স্বীকার করেননি। তবে ডা. রিধির হঠাৎ করে রেগে যাওয়ার অভ্যাস আছে। এই বিষয়ে তাকে সতর্ক করা হবে।
No comments:
Post a Comment