যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলাস্থ গৌরিঘোনা ইউনিয়নের ভরত ভায়না গ্রামে ভদ্রা নদীর তীরে ভরতের দেউল (Bharater Deul) অবস্থিত। টিলা আকৃতির দেউলের উচ্চতা ১২.২০ মিটার এবং পরিধি ২৬৬ মিটার। ধারণা করা হয় ভরতের দেউল প্রাচীন গুপ্ত যুগের খ্রিষ্টীয় ২য় শতকে নির্মিত হয়েছে। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের ফলে দেউলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯২৩ সালের ১০ জানুয়ারী এই দেউলটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। ১৯৮৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দফায় খনন কাজের ফলে দেউলের আকার, মঞ্চ, মন্দির এবং প্রায় ৯৪টি কক্ষের সন্ধ্যান পাওয়া যায়। চারপাশে ৪টি উইং ওয়ালে ঘেরা ১২টি কক্ষ ছাড়া বাকি ৮২টি কক্ষগুলো বৌদ্ধ স্তুপাকারে তৈরি। আর স্তুপের চূড়ায় থাকা ৪টি কক্ষের দুইপাশে আরও ৮টি ছোট ছোট কক্ষ দেখতে পাওয়া যায়।
ভরতের দেউল থেকে প্রাপ্ত নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে পোড়া মাটির তৈরী নারীর মুখমন্ডল, নকশা করা ইট, মাটির ডাবর, পোড়ামাটির অলংকার এবং দেবদেবীদের টেরাকোটার ভগ্নাংশ। ভরতের দেউলে ব্যবহৃত টেরাকোটা ও ইটের আকার বাংলাদেশের অন্যান্য সকল প্রাচীন স্থাপনায় ব্যবহৃত টেরাকোটা ও ইটের মধ্যে সর্ববৃহৎ। কেশবপুর উপজেলা সদর হতে ভরতের দেউলের দূরত্ব ১৯ কিলোমিটার। স্থানীয় বাসীন্দাদের কাছে এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি ভরত রাজার দেউল (Bharat Rajar Deul) নামে অধিক পরিচিত।
কীভাবে যাবেন
যশোর জেলায় অবস্থান হলেও খুলনা থেকে ভরতের দেওল যাওয়া সহজ। বাস বা ট্রেনে খুলনা /যশোর শহর থেকে চুকনগরে চলে আসুন। সেখান থেকে ভ্যান অথবা মোটরসাইকেলে ভরতের দেউল দেখতে যেতে পারবেন।
আবার অন্য পথে খুলনা হতে রিক্সা বা অটোতে চড়ে মহসিন মোড়ে আসতে হবে। মহসিন মোড় হতে শাহপুর বাজার এসে ভ্যানে চড়ে ভরতের দেউল যেতে পারবেন। মনে রাখা জরুরী ভ্যানচালকেরা জায়গাটিকে ‘ভরতের দেল’ নামে চেনে।
কোথায় থাকবেন
ভরতের দেউলের আশপাশে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা নেই। রাতে থাকতে হলে তাই খুলনা/যশোর শহরে ফিরে আসতে হবে। খুলনা/যশোর শহরে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন
ভরতের দেউল দেখে চুকনগরের বিখ্যাত আব্বাসের হোটেলের খাসির মাংস খেয়ে দেখতে পারেন।
No comments:
Post a Comment