যশোরে বিয়ের সাজে বাইক চালিয়ে আলোচিত ফারহানা আফরোজ নববিবাহিত নন। তিন বছর আগে তার বিয়ে হয়েছে এবং তিনি এক সন্তানের জননী। যেদিন মোটরসাসইকেল চালিয়ে তার ছবি ফেসবুকে দিয়ে ভাইরাল হন তিনি, সেদিন ছিল তার বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, গায়ে হলুদের নয়। এবং ওই অনুষ্ঠানের জন্য পার্লার থেকে সেজে বন্ধুদের সাথে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে বাড়িতে ফেরেন তিনি।
ফারহানা আফরোজের এক চাচা শাকুর মাহমুদ শোভন জানান, ২০১৭ সালে ঢাকায় একটি প্রাইভেট ফার্মে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরিরত হাসনাইন রাফির সঙ্গে তার আকদ সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে এ দম্পতি ঢাকাতেই একত্রে বসবাস করছেন। তবে বিয়ের সময় কোন জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান না করতে পারার আফসোস ছিল ফারাহানার মধ্যে। চলতি বছরের জুনে তার একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়।
এরপর গত ১৩ আগস্ট যশোরের বাড়িতে তার বিবাহোত্তর ও সন্তান হওয়াকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে নবজাতককে নেয়ার জন্য তার স্বামীসহ শ্বশুরালয়ের লোকেরা ওই দিন যশোরে আসেন। এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে শহরের পোস্টঅফিস পাড়ার একটি বিউটি পার্লার থেকে সেজে ফারহানা বন্ধুদের নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে শহরের ঈদগাহ মোড় হয়ে সার্কিট হাউজের সামনে দিয়ে নিজের বাড়িতে ফেরেন।
শাকুর মাহমুদ আরও জানান, গত এপ্রিল মাসে বিবাহোত্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে নিষেধাজ্ঞায় সে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ১৩ আগস্ট।
ফারহানার বান্ধবী নওরীন মোক্তাকি জয়া বলেন, যেহেতু ও (ফারহানা) বাইক চালাতে পারে তাই শখ ছিল নিজের বিয়েতে বাইক রাইডিং করার। যদিও ও (ফারহানা) শো-আপ চায়নি। বিয়ের সময় অনুষ্ঠান করতে পারেনি, কেবল কলমা হয়েছিল। তবে ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা ছিল তার। এতদিন পর বিয়ের অনুষ্ঠান করছে, সেখানে সে তার শখ পূরণ করেছে তাতে অন্যদের সমস্যাটা কি?
ফারহানার প্রতিবেশী এম. তমাল আহমেদ বলেন, ফারহানার পরিবারটি অনেক আগে থেকেই সাংস্কৃতিকমনা ও প্রগতিশীল। বাংলাদেশের অভিনয় জগতের তিন নক্ষত্র সুচন্দা, ববিতা ও চম্পা- সম্পর্কে ফারহানার চাচাতো ফুফু। ফলে সে স্বাধীনচেতা ও প্রগতিশীল হিসেবেই বড় হয়েছে।
যশোর শহরের পোস্টঅফিস পাড়ার বাসিন্দা মৃত সোহেল হাসান মিঠুর মেয়ে ফারহানা আফরোজ ঢাকায় ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে এইচআরএ-এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর চাকরিতে ইস্তফা দেন। যদিও সেসময় মোটরসাইকেল চড়েই তিনি চাকরিস্থলে যাতায়াত করতেন।
No comments:
Post a Comment