যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বলেছেন, ২০১৬ সালের শুরুতে পৌরসভার দায়িত্ব নেয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৩৪ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ১২-২৪ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য হরিণার বিলে ৫ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। যার ফলে শহরে জলাবদ্ধতা পূর্বের তুলনায় অনেক কমে গেছে। টিবি ক্লিনিক মোড় ও শংকরপুর এলাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করা হবে, আশা করি এর সমাধান হবে।গতকাল বিকাল ৫ টায় অনলাইন জুম মিটিংয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) যশোরের সাথে ‘পৌরসভার সেবার মানোন্নয়নে করণীয়’ শার্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পৌর মেয়র বলেন, শহরের রেল রোড সংস্কারের জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগে এই রোডে সিল কোটের কাজ করা হয়েছিল, যার কারণে সেটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এবার কর্পেটিং করা হবে। হোটেল ওরিয়নের সামনের রাস্তা সংস্কারের কাজ ৭-৮ দিনের মধ্যে শুরু হবে। শহরের আরো ৩০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ আগামী সপ্তাহে শুরু হবে। শহর থেকে ক্যান্টনমেন্ট হয়ে বিমান বন্দর যাওয়ার রাস্তার পৌরসভার অংশ ডিভাইডার দিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হবে। লালদীঘির এক ইঞ্চি জায়গাও ভরাট করা হবে না। সেখানকার স্থাপনা নির্মাণ শেষ হলে পুনরায় লালদীঘি সংস্কার করা হবে। পৌর পার্ক হতে চুরি যাওয়া ঝর্ণার নজেল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং সেগুলি আদালতের নির্দেশে হাতে পেলে পুনরায় সবার উপস্থিতিতে স্থাপন করা হবে। যশোরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিপরীত দিকে আরেকটি পার্ক নির্মান করা হচ্ছে। সেটিও দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক হবে। টাউন হল মাঠে স্বাধীনতা উন্মুক্ত মঞ্চ নতুনভাবে তৈরির জন্য যশোর জেলা পরিষদ ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে, পৌরসভা আরো ৫০ লক্ষ টাকা দেয়া হবে। পৌরসভা স্বাধীনতা মঞ্চ তৈরির কাজ তত্ত্বাবধান করবে। বর্তমানে মঞ্চ নির্মাণের ডিজাইনের কাজ চলছে। করোনাকালীন সময়ে যশোর পৌরসভা ৬০ হাজার মানুষকে ১০ কেজি করে চাল দিয়েছে। এছাড়া ৯ হাজার ২০০ জনের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ পৌরসভার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। শহর পরিচ্ছন্নতার জন্য শহরের সব স্থানেই ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। পৌরসভার কাছে কেউ ডাস্টবিন চাইলে সেটি দেয়া হবে। শহর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সকল প্রকার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। যার কারণে যশোর পৌরসভা অন্যান্য আর দশটা পৌরসভা এমনকি সিটি কর্পোরেশনের থেকেও পরিচ্ছন্ন। যশোর পৌরসভার বাসিন্দাদের আধুনিক পৌরসভা উপহার দিতে পৌর প্রশাসনের কাজ আরো আন্তরিকতার সাথে করা হবে। শহরের দড়াটানায় ভৈরব নদের খনন কাজ শেষ হলে নদীর দুই পাড় দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হবে। সে উদ্দেশ্যেই পরিকল্পনা করা আছে। শহরের প্রবেশ মুখে চাঁচড়া চেকপোস্টে প্রবেশদ্বার নির্মাণের জন্য ডিজাইনের কাজ চলছে। যশোর পৌর এলাকা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী শহরের বাইরে দিয়ে বাইপাস রোড হবে শহরের মধ্যে কোন ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। শহরের পরিচ্ছন্নতার জন্য নাগরিকদের সচেতনতার পাশাপাশি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
পৌর সচিব আজমল হোসেন বলেন, লকডাউনে পৌরসভার নাগরিক সেবা কর্যক্রম একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। জলাবদ্ধতা নিরসনে আরো কাজ করা হবে। তবে অন্যান্য পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন থেকে যশোর পৌরসভা সফল। করোনাকালীন সময়ে যশোর পৌরসভা ২০৭ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেছে।
টিআইবি’র সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার কাজী শফিকুর রহমান বলেন, যশোর পৌরসভার ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট অনলাইন প্লাটফর্মে বা অন্য কোন উপায়ে জনগণের সামনে উন্মুক্ত করা যায় কিনা তার ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। যশোর পৌর এলাকায় কত লোকের বসবাস এবং তারা কে কোন পেশার সাথে যুক্ত সে ধরনের তথ্য সম্বলিত তালিকা উন্মুক্ত করা দরকার। করোনাকালীল সময়ে যশোর পৌরসভার নিজস্ব তহবিল ও প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ত্রাণ কারা পেয়েছেন তাদের তালিকা উন্মুক্ত করার অনুরোধ করছি। যশোর পৌরসভার যে উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ জনগণের নিকট উন্মুক্তকরণের সুপারিশ করছি। পৌরসভার সকল প্রকার তথ্য উন্মুক্ত রাখা যাতে অবাধ তথ্য প্রবাহের সৃষ্টি হয়। পৌর কাউন্সিলন রাশেদ আব্বাস রাজ বলেন, ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য মেয়র মহোদয়কে আবারো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করছি।
সনাক সভাপতি অধ্যাপক সুকুমার দাস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা সঞ্চালনা করেন সনাক সদস্য এস এস তৌহিদুর রহমান। সভায় পৌর কাউন্সিলর, পৌর কর্মকর্তা, সনাক, স্বজন, ইয়েস, ইয়েস ফ্রেন্ডসসহ টিআইবি কর্মীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা সংগ্রামী, ক্রিয়েটিভ,সৎ এবং পরিশ্রমী, তাদের উদ্দেশ্যই হলো দেশের উন্নয়ন। আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করি।
ReplyDelete