বাংলাদেশের নাগরিক নন ড. বিজন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে বাংলাদেশে - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

as

a1

Saturday, August 29, 2020

বাংলাদেশের নাগরিক নন ড. বিজন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে বাংলাদেশে

 


নাগরিকত্ব জটিলতায় পড়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা শনাক্তকরণ কিট উদ্ভাবক দলের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হলেও বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিক নন তিনি। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এ অণুজীব বিজ্ঞানী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সমর্পণ করে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। ফলে দেশে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি টেস্টের এ উদ্ভাবক গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে আর যুক্ত থাকছেন না।

এ বিষয়ে শনিবার (২৯ আগস্ট) গণমাধ্যমকে বিজন কুমার শীল বলেন, আমার আদি বাড়ি ও জন্ম বাংলাদেশে। তবে আমি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সমর্পণ করে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছি। তিন বছরের চুক্তিতে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলাম। গত ১ জুলাই ওই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। ভিসার মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করেছি। তবে বাংলাদেশ সরকার এখনো সেটি বাড়ায়নি। পরে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে ট্যুরিস্ট হিসেবে বাংলাদেশে অবস্থান করছি। এ অবস্থায় গণবিশ্ববিদ্যালয় বা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারি না। আর গণবিশ্ববিদ্যালয়ও আমার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে।

সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্বের বিষয়ে বিজন কুমার শীল বলেন, আমি ২০০২ সালে সিঙ্গাপুর সিভিল সার্ভিসে যোগদান করি। সিঙ্গাপুরে চাকরি নেয়ার পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছিলাম, যেটা নিয়ম ওখানকার। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব নিয়েছিলাম।

এদিকে  ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিজন কুমার শীলের মতো একজন বিজ্ঞানীকে আমার প্রতিষ্ঠানে রাখার মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল না বলে আগে আমি তাকে রাখতে পারিনি। এবার অ্যান্টিবডি কিট উদ্ভাবনে তিনি সব কিছু করেছেন। তাকে গণস্বাস্থ্য থেকে বাদ দেয়া হয়নি। তিনি এখনও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং গণবিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন। আমার সঙ্গে তার কোনো ধরনের বিরোধ বা দূরত্বও তৈরি হয়নি। কোনো মহল হয়তো বিষয়টি অন্যভাবে দেখছে।

তিনি আরও বলেন, নাগরিকত্ব জটিলতায় গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেনের কাজ অনেক পিছিয়ে গেছে। এটি করা না গেলে গণস্বাস্থ্যের ১০ কোটি টাকা ক্ষতি হবে। আর সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবে আরও অনেক বেশি।

ড. বিজন কুমার শীল ১৯৬১ সালে  নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। কৃষক পরিবারের সন্তান বিজন নাটোর বনপাড়ার সেন্ট যোসেফ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষে ভর্তি হন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে স্নাতক সম্পন্ন করেন ভেটেরিনারি সায়েন্স বিষয়ে। এখান থেকেই তিনি অণুজীববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৯২ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেন ইংল্যান্ডের সারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

সার্স প্রতিরোধ তিনি সিঙ্গাপুর সরকারের বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল তখন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল সিঙ্গাপুর গবেষণাগারে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে সার্স ভাইরাস দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সার্স প্রতিরোধে যে কজন বড় ভূমিকা রেখেছেন ড. বিজন শীল তাদের একজন। ‘র‌্যাপিড ডট ব্লট’ পদ্ধতিটি ড. বিজন কুমার শীলের নামে পেটেন্ট করা। পরে এটি চীন সরকার কিনে নেয় এবং সফলভাবে সার্স মোকাবিলা করে। তিনি সিঙ্গাপুরেই গবেষণা করছিলেন ডেঙ্গুর ওপরেও। গবেষণা চলাকালে তিনি তিন বছর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগ দেন।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad