যশোরে স্বাস্থ্যসেবা সেক্টরে অনিয়ম অসংগতি রুখতে এ অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন অভিযানিক টিমের প্রধান যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মীর আবু মাউদ।
যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানিয়েছে, সংঘবদ্ধ অসাধু চক্র যশোর শহরসহ অনেক স্পটে অবৈধভাবে হাসপাতাল, ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে অনৈতিকতা চালিয়ে যাচ্ছে এমন অনেক অভিযোগে ৫ আগস্ট অভিযান চলে। বার বার নোটিশ দেয়া হলেও তারা সতর্ক না হয়ে উল্টো রোগী সেবার নামে প্রতারণা করা, স্বাস্থ্য বিভাগের কোন অনুমোদন ছাড়াই শয্যা খোলা, প্যাথলজি না থাকলেও প্যাথলজিক্যাল নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া, এমনকি নূন্যতম কাগজপত্র না থাকার মত ভয়ংকর সব ব্যাপার প্রতিরোধে অভিযান চলে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মীর আবু মাউদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। সাথে আরো ছিলেন সিনিয়র কনসালট্যান্ট আব্দুর রহিম মোড়ল, ডাক্তার রেহে নেওয়াজ রনি, উপজেলা স্যানিটারি কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম লাহেড়িসহ থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম।
ল্যাব এইড প্রাইভেট হাসপাতালের কোনো অনুমোদন নেই। আবার দেশ ও স্ক্যানের অনুমোদন থালেও বিধি মানা হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই, প্যাথলজির জন্য আলাদা নিবন্ধন, ডিগ্রীধারী পাথলজিস্ট, রেডিও মেশিনসহ সনদধারী রেডিও টেকনিশিয়ান নেই। সব মিলিয়ে হাস্যকর ও আজব দেশের মত এখানে এই হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো চলছিল।
এ ব্যাপারে ডাক্তার মীর আবু মাউদ জানিয়েছেন, অনেকগুলো নেই নেই এর মধ্যে চলছিল ওই প্রতিষ্ঠানগুলো। সব প্রতিষ্ঠানেই প্যাথলজি সমস্যা। আবার ল্যাব এইডের অনুমোদন নেই। যে কারণে ওই ৩ টি সিল করা হয়েছে। এছাড়া যশোরে পপুলার ও অসীম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। প্যাথলজি নোংরা। তাদের ত্রুটিগুলো দ্রুত শুধরে নিতে বলা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
আভিযানিক টিম শহরের ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায়। হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলি হচ্ছে শহরের মুজিব সড়কের ল্যাব এইড, নিরালাপট্টির নোভা ডায়াগনস্টিক, জেনারেল হাসপাতালের সামনে অসীম ডায়াগনস্টিক এন্ড ক্লিনিক, দেশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক, পপুলার মেডিকেল, ও স্ক্যান হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
আভিযানিক টিমটি সবকটি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব প্যাথলজিতে অনিয়ম লক্ষ্য করে। ফলে সব গুলি হাসপাতাল, ক্লিনিকের ল্যাব প্যাথলজি সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেয়। বিশেষ করে অনিয়মের শীর্ষে রয়েছে স্ক্যান হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ হাসপাতালের এখানে নিয়মিত কোন ডিউটি ডাক্তার নেই। অন কলে ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা হচ্ছে। প্যাথলজি অপরিচ্ছন্ন। অদক্ষ প্রশিক্ষনহীন টেকনিশিয়ান দ্বারা প্যাথলজি পরিচালিত হয়। পোস্ট অপারেটিভ রুমে এসি নেই। প্রি অপারেটিভ রুম অপরিচ্ছন্ন (অপারেশনের আগে যে রুমে রােগী রাখা হয়)। এসি নেই। এ হাসপাতালে ৩০ বেডের অনুমোদন থাকলেও ডিপ্লোমা পাশ কোন নার্স নেই।
একই অবস্থা পপুলার মেডিকেলের। এখানেও অদক্ষ প্যাথলজিস্ট দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আব্দুল গনি নামে একজন প্যালজিস্ট দিয়ে দায় সারা ভাবে ল্যাব পরিচালনা করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডা মীর আবু মাউদ বলেন, প্রথম দিনে এদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এসে একই অনিয়ম দেখা গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ দেয়া না পর্যন্ত সব ল্যাব প্যাথলজি সাময়িক ভাবে বন্ধ থাকবে।
No comments:
Post a Comment