স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও মহানগরীর গল্লামারী এলাকার রাইসা ক্লিনিকের মালিক ডা. আবদুর রকিব খানকে হত্যার প্রতিবাদে খুলনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। আজ বুধবার দুপুর আড়াইটায় স্থানীয় বিএমএ’র জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এর পর থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন তারা।
খুলনা বিএমএর প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদ ডা. সুমন রায় স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব আসামিকে গ্রেপ্তার এবং খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত চিকিৎসকদের এ ঘর্মঘট চলবে। জেলার সকল চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকলেও কোডিভ-১৯ হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকবে।
খুলনা বিএমএ সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে।
রাইসা ক্লিনিকে সিজার হওয়া শিউলি বেগমের মৃত্যুর জন্য চিকিৎসক দায়ী নন উল্লেখ করে ডা. বাহারুল আলম বলেন, কোনো চিকিৎসকই চান না রোগীর মৃত্যু হোক। কিন্তু তারপরও রোগীর স্বজনরা চিকিৎসককে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
এদিকে ডা. আবদুর রকিব খানকে হত্যার ঘটনায় তার ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮/১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে আবদুর রহিম নামে এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
এর আগে হত্যার প্রতিবাদ এবং হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার দুপুর দেড়টায় নগরীর সাত রাস্তা মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে খুলনা বিএমএ। সমাবেশে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ, খুলনার সিভিল সার্জনসহ শতাধিক চিকিৎসক অংশ নেন।
এতে জানানো হয়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুর দেড়টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।
প্রসঙ্গত, নগরীর রাইসা ক্লিনিকে শিউলি বেগম নামে এক নারী সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন। ১৫ জুন রাতে তার মৃত্যু হয়। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে তার স্বজনরা হাসপাতালে ভাঙচুর করে। এ সময় তাদের হামলায় গুরুতর আহত হন ডা. রকিব। পরে খুলনার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা. রকিব ১৬ জুন বিকেলে মারা যান।
No comments:
Post a Comment