লাদাখ সীমান্তে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে চীন। এক সপ্তাহে সীমান্তের গালওয়ান উপত্যকার কাছে ২০০ সামরিক ট্রাক, বুলডোজার ও ভারী যান মোতায়েন করেছে দেশটি। স্যাটেইলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে এই তথ্য দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। এদিকে লাদাখ সীমান্তে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত উস্কানির অভিযোগ তুলেছে বেইজিং।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনা সেনাদের মধ্যে উত্তেজনার পর গত ১৫ জুন সংঘাতে জড়ায় দুই দেশই। এরপর থেকে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করার অভিযোগ আনছে দুই পক্ষই।
সর্বশেষ স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে লাদাখ সীমান্তের কাছে সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে চীন। গত ৯ জুন সীমান্তের কাছে গালওয়ান উপত্যকার যে ছবি স্যাটেলাইটে ধরা পড়ে তার থেকে ১৬ জুনের ছবি অনেকটাই আলাদা। ছবিতে দেখা যায় শতাধিক ট্রাক, বুলডোজার ও সামরিক যান নিয়ে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এগিয়ে যাচ্ছে চীন।
ঐ ছবিতে আরো দেখা যায়, এলএসি থেকে ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার রেঞ্জের মধ্যে চীনা বাহিনীর ৫০টি তাঁবুও স্থাপন করেছে। এছাড়াও এলএসি বরাবর গালওয়ান নদীর যে গতিপথ রয়েছে সেখানে নতুন করে কোনো অবকাঠামো গড়ে উঠেছে বলে জানাচ্ছেন সামারিক বিশেষজ্ঞরা।
আর এ সব কর্মকাণ্ড থেকে বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, এর মাধ্যমে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। যে কোনো সময়েই অতর্কিতে হামলা হতে পারে বলেও শঙ্কা তাদের।
ভারতীয় এক সেনা কর্মকর্তা দাবি, পালিয়ে যাওয়া নিরস্ত্রদেরও খুঁজে খুঁজে হত্যা করেছে চীনা সেনারা। তিনি আরো জানান, ১৫ জুনের সংঘাতের সময় শত্রুপক্ষের হাতে ধারালো পেরেকযুক্ত লোহার রড ছিল। নিহতদের মধ্যে অনেকে প্রাণ বাঁচাতে গালওয়ান নদীতে ঝাঁপ দেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে গত ১৫ জুন লাদাখ সীমান্তে ভারত-চীন সংঘর্ষ নিয়ে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত উস্কানি দেয়ার অভিযোগ তুলেছে বেইজিং। সেদিন ভারতীয় সেনারা চীনা ভূখণ্ডে ঢুকে আক্রমণ করাতে সংঘাত শুরু হয় এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে বলেও দাবি করেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিজিয়ান ঝাও। তবে এ ঘটনায় চীনের কতোজন সৈন্য হতাহত হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানানি বেইজিং।
অন্যদিকে গালওয়ানে সংঘর্ষ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পোস্ট চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে মুছে দেয়া হচ্ছে বলেও ভারতের গণমাধ্যমগুলো দাবি করে আসছে।
No comments:
Post a Comment